শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে দুর্গতদের হাতে শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় সহায়তা তুলে দেন।

ত্রাণ বিতরণের সময় ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল ইসলাম রাসেল, জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল হক মনির উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবীরা।

জেলা প্রশাসক বলেন, “দুর্যোগের সময় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সরকারের দায়িত্ব। শেরপুরের প্রতিটি উপজেলায় আমরা এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখব। মানুষের প্রাথমিক চাহিদা পূরণ ও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে আমাদের এই কার্যক্রম জরুরি।”

এই ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর বহু পরিবারকে আর্থিক ও খাদ্য সংকটে সহায়তা করেছে। স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক পরিবারের খাবারের জোগান এখন অনিশ্চিত। জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ তাদের জীবনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, “বৃষ্টির কারণে আমাদের ধানক্ষেত ও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সরাসরি এসে ত্রাণ দেওয়ায় আমরা অনেক স্বস্তি পেয়েছি। এই ত্রাণ আমাদের পরিবারকে কয়েকদিনের খাবারের নিশ্চয়তা দিয়েছে।”

ত্রাণ বিতরণের সময় স্থানীয়রা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা সরাসরি এলাকা পরিদর্শন করে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, যা তাদের জন্য অনেক বড় সহায়তা। ত্রাণের মধ্যে ছিল শুকনো খাবার, চাল, ডাল, তেল, নুন এবং মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যতেও পাহাড়ি ঢল বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় জেলা প্রশাসন নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন শুধু ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা দেয়াই নয়, বরং তাদের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক মানসিক সান্ত্বনাও প্রদান করছে। স্থানীয় মানুষদের উদ্বেগ কমাতে এবং জীবনের স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

জেলা প্রশাসনের এই কার্যক্রম শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দ্রুত সাড়া দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে সরকারের সহায়তা পৌঁছানোর মাধ্যমে সাময়িক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং তাদের আস্থা বেড়েছে যে দুর্যোগে তারা একা নয়।