মনজু হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার :
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে “সন্ত্রাসী” বলে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হলে তাঁকে ঘাট কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী জানান, ঘটনার পরপরই ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানকে আজকের এই ঘাটের কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর আওলিয়া ঘাটে মহালয়া উপলক্ষে শতাধিক যাত্রী বহনকারী নৌকা ডুবে যায়। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৭১ জন। এর তিন বছর পূর্তিতে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কয়েকজন সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহে ঘটনাস্থলে গেলে এই ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, ওই সময় নদীতে মোটরসাইকেল বহনকারী নৌকা চলাচল করছিল। কিন্তু তারা নিউজ কাভার করতে নৌকায় উঠতে চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট বাধা দেন এবং সাংবাদিক পরিচয় শোনার পর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন—“আপনি আল জাজিরার সাংবাদিক হন বা অন্য কেউ হন, যেতে পারবেন না।” এ সময় সাংবাদিকরা ক্যামেরায় ঘটনাটি ধারণ করলে তিনি আরও অশালীন ভাষায় সাংবাদিকদের “সন্ত্রাসী” বলে সম্বোধন করেন। শতাধিক লোকের সামনে এভাবে সাংবাদিকদের অপমানিত করার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম। তবে সাংবাদিকরা বিষয়টি অবহিত করলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বরং সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, “কি পারেন করেন।”
ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান বলেন, “আমরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে বাধা দেন, অথচ অন্যরা স্বাভাবিকভাবেই পারাপার হচ্ছিল। এমনকি ইউএনও নিজেও মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকায় উঠেছেন।”
বাংলাভিশন টেলিভিশনের সাংবাদিক মোশারফ হোসেন বলেন, “আমাদের সাংবাদিক পরিচয় শুনে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন—‘আপনারা তো সন্ত্রাসী।’ একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার মুখে এমন বক্তব্য কখনোই কাম্য নয়।”