মাহফুজুর রহমান সাইমন, শেরপুর
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে কৌশলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নুরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন স্ত্রীর বাবা-মা। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী নালিতাবাড়ীর নুরুজ্জামান ও মমিতা নিশাত মেঘলার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম হলেও এক দশক পর তাদের দাম্পত্য জীবনে ভাঙন ধরে।
অভিযোগ অনুযায়ী, স্ত্রীকে ঢাকায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নুরুজ্জামান কৌশলে তালাকনামায় স্বাক্ষর করান। এ সময় বিয়ের সময় দেওয়া স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র, মোটরসাইকেল ও নগদ টাকাসহ লক্ষাধিক টাকার সম্পদ হাতিয়ে নেন তিনি। শ্বশুর আব্দুল মালেক অভিযোগ করে বলেন, “বিয়ের সময় আমি আট ভরি স্বর্ণ, মোটরসাইকেল, সাড়ে চার লাখ টাকা এবং পরে আরও প্রায় ১৪ লাখ টাকা দিয়েছি। এসব দিয়েই আমি আজ নিঃস্ব।”
ডিভোর্সের পরও নুরুজ্জামান ও মেঘলার মধ্যে যোগাযোগ চলছিল। কিন্তু নুরুজ্জামানের দ্বিতীয় বিয়ের কারণে নতুন জটিলতা তৈরি হয়। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মেঘলা আবারও সংসার টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা চালান।
২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে নুরুজ্জামান কর্মস্থল মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকাকালে মেঘলা সন্তানদের নিয়ে গড়কান্দায় শ্বশুরবাড়িতে যান। এ সময় কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মেঘলার মা ও খালাকে মারধর করা হয় এবং মেঘলার গলায় থাকা স্বর্ণের মালা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। স্থানীয়রা আহত মেঘলা (২৮), তার মা রেহেনা পারভিন (৫০) ও খালা শাপলা খাতুনকে (৩০) উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মেঘলা সাংবাদিকদের বলেন, “আমার স্বামী প্রতারণা করে আমাকে তালাক দিয়েছে। আমি আমার সন্তান ও সংসার ফিরে পেতে চাই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
অন্যদিকে নুরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মেঘলা নিজেই আমাকে ডিভোর্স দিয়েছিল। পরে তার পরিবার তাকে ফিরিয়ে আনে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। বরং আমি তার নামে চার শতাংশ জমি লিখে দিয়েছি।”
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ওসি মো. সোহেল রানা জানান, “একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”