শেরপুর প্রতিনিধি:
আট বছরের অপেক্ষা পেরিয়ে শেরপুর সদরের কামারের চরের মানুষ আজও কাদা আর ধুলোর নরকে বন্দি। মাত্র এক কিলোমিটার পথ—মধ্য কামারের চর ঈদগাহ মাঠ থেকে চর পক্ষীমারী বাজার পর্যন্ত—যেন দুই হাজার পরিবারের জীবনের বন্ধন ও বেদনার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
এই পথটি শুধু একটি রাস্তা নয়; এটি কৃষকের ফসল, শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ, ব্যবসায়ীর আশা আর মানুষের দৈনন্দিন জীবনের রক্তধারা। কিন্তু দীর্ঘদিন টেন্ডারের জটিলতায় পড়ে রাস্তার উন্নয়ন কাজ থমকে আছে। ফলে বর্ষায় এটি কাদার জলাভূমি, আর গ্রীষ্মে ধুলোর মরুভূমি।
চর পক্ষীমারী বাজারের প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা এখন চলাচলের অনুপযোগী। কাদা-মাটিতে পা ফেলতে না পেরে অনেকেই বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে ঘুরে যান। কৃষকরা বলেন, “আমাদের ফসল বাজারে নিতে পারি না, ট্রলি বা ভ্যান কাদায় আটকে যায়। ধানের ন্যায্য দাম পাই না, সব ক্ষতি হয়।”
স্কুলগামী শিশুরাও এই ভোগান্তির শিকার। কাদা ও ধুলার কারণে বই-খাতা নষ্ট হয়, অনেকে স্কুলে নিয়মিত যেতে পারে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কাজের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
বুধবার সকালে কামারের চরের ভুক্তভোগী গ্রামবাসী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে কষ্টের ভাষা—তাদের একটাই দাবি, “রাস্তা সংস্কার চাই, চলাচলের পথ চাই।”
মানববন্ধন শেষে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটির সংস্কার এবং উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়।
একজন বয়োজ্যেষ্ঠ গ্রামবাসী বলেন, “আমরা উন্নয়নের স্বপ্ন দেখি, কিন্তু কাদা-পানি আমাদের স্বপ্ন ডুবিয়ে দিচ্ছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, আমাদের জীবনযাত্রা থেমে যাবে।”
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। তবে কামারের চরের মানুষ এখন আশার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে—এই আশ্বাস কি সত্যিই আট বছরের কাদার জট খুলবে?