শরিফা বেগম শিউলী
স্টাফ রিপোর্টার
রংপুরে টাইফয়েড টিকা (টিসিভি)-২৫ সংক্রান্ত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে বিভাগীয় পর্যায়ের পরামর্শ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের হলরুমে এই কর্মশালার আয়োজন করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মাস কমিউনিকেশন (এনআইএমসি)।
টাইফয়েড প্রতিরোধে টিসিভি টিকার গুরুত্ব, টিকাদান কার্যক্রম সম্পর্কে গণমাধ্যমের ভূমিকা এবং সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পরামর্শ কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে সংক্রমণজনিত রোগের মধ্যে টাইফয়েড জ্বর অন্যতম। এটি স্যালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। খাওয়ার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত না ধোয়া, দূষিত পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়।
৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু — অর্থাৎ প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা (টিসিভি) প্রদান করা হবে।
১️⃣ টিকা গ্রহণের আগে সকালের নাস্তা খেয়ে আসতে হবে — খালি পেটে টিকা নেওয়া যাবে না।
২️⃣ টিকা গ্রহণের পর অন্তত ৩০ মিনিট টিকাদান কেন্দ্রে অবস্থান করতে হবে।
৩️⃣ টিকা দেওয়ার স্থানে সামান্য লালচে ভাব, ব্যথা বা অল্প জ্বর দেখা দিতে পারে—যা স্বাভাবিক ও সাময়িক।
The Global Burden of Disease Study অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৮,০০০ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে মৃত্যুবরণ করেছে, যার মধ্যে ৬৮ শতাংশই শিশু। টাইফয়েড জ্বর শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, এটি অর্থনৈতিক ক্ষতি ও দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতারও কারণ হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী পাকিস্তান, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে লক্ষ লক্ষ শিশু টিসিভি টিকা গ্রহণ করছে, যা নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোঃ আবু জাফর।
বিশেষ অতিথি ছিলেন —
রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ গাউসুল আজিম চৌধুরী,
রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক আমিনুল ইসলাম,
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ রবিউল ফয়সাল,
চিফ অফ ফিল্ড, ইউনিসেফ রাজশাহী-রংপুর বিভাগ এএইচ তৌফিক আহমেদ,
মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মুহাম্মদ হিরুজ্জামান এনডি,
এনপিও, ইপিআই, ডব্লিউএইচও রংপুর ডাঃ জোবায়ের আল মামুন,
সিভিল সার্জন, রংপুর ডাঃ শাইন সুলতানা,
রংপুর জেলা পিআইবি’র উপ-পরিচালক আলমগীর কবির,
এবং রংপুর বিভাগের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, “শিশু, কিশোর ও নারীরা দেশের ভবিষ্যৎ; তাদের সঠিক বিকাশ ও সুরক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম।”
তারা আরও উল্লেখ করেন, সমাজে সচেতনতা গড়ে তোলার মাধ্যমে সাংবাদিকদের ইতিবাচক অংশগ্রহণই পারে শিশুদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে। এই কর্মশালা সাংবাদিকদের সেই দায়িত্ববোধকে আরও শক্তিশালী করবে।