কাগজে ২৪৩ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও শ্রেণিকক্ষে পাওয়া গেল মাত্র ১৫ জন। শিক্ষার্থী না থাকলেও নিয়মিত চলছে বেতন উত্তোলন ও নিয়োগ প্রক্রিয়া।
মনজু হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:
পঞ্চগড় সদর উপজেলার মফিজার রহমান কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে কম। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো কলেজে উপস্থিত শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র ১৫ জন। অথচ কাগজে দেখানো হয়েছে ২৪৩ জন শিক্ষার্থী।
প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ১৯ জন এবং কর্মচারী ১৮ জন—মোট ৩৭ জন। এছাড়া নন-এমপিও আরও ৪ শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার্থী না থাকলেও এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীর বেতনে প্রতিবছর সরকারের অর্ধকোটি টাকারও বেশি ব্যয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শিক্ষার্থী কম থাকায় অনেক শিক্ষক নিয়মিত কলেজে আসেন না। কার্যত কলেজটি শুধু কাগজে-কলমেই টিকে আছে। সামান্য কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে, অথচ ডিগ্রি পর্যায়ে চালুর জন্য সম্প্রতি আরও ৪৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে চেয়ারে ধুলার স্তর জমে আছে, শিক্ষক উপস্থিত নেই, তিনটি শ্রেণিকক্ষে মিলেছে মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে দফায় দফায় শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। গত ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ২১ জন শিক্ষার্থী, পাশ করেছে মাত্র ৫ জন। বর্তমানে একাদশ শ্রেণীতে দেখানো হচ্ছে ৮১ জন ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ১৬২ জন শিক্ষার্থী।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান বলেন, “এ কলেজটি আমাদের তত্ত্বাবধানে নয়। বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, রংপুর অঞ্চলের অধীনে।”
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুর উল্লাহ বলেন, “কলেজটি প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী দিনমজুর বা ভ্যানচালক পরিবারের সন্তান। অনেকেই ঢাকায় কাজ করেন, তাই নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারেন না।”
সচেতন নাগরিকরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।