নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল:
দেশব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই শিক্ষক ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষকরা পরীক্ষার দায়িত্ব না নেওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তারাই পরীক্ষা পরিচালনা করছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বাকেরগঞ্জে ২৭৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে প্রায় ২৯,৮৬২ শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। গত ২ ডিসেম্বর, ১৪টি ইউনিয়নের ১৪২টি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কর্মবিরতি পালন করেছেন।
আজ, ৩ ডিসেম্বর, ২৭৯টি বিদ্যালয়ের সব সহকারী শিক্ষক কর্মবিরতিতে ছিলেন। শিক্ষকরা দায়িত্ব না নেওয়ায় পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে বিদ্যালয়গুলোতে অভিভাবকরা নিজেরাই পরীক্ষা নিচ্ছেন, আবার কোথাও শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা পরিচালনা করছেন।
বাকেরগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে থাকলেও লাইব্রেরিতে অবস্থান করছেন। এসময় প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার বেগম, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের প্রধান ইনস্ট্রাক্টর হেমায়েত উদ্দিন ও কয়েকজন অভিভাবক পরীক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কোথাও পরীক্ষায় শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন না, কোথাও প্রধান শিক্ষক অফিস সহকারীকে নিয়ে পরীক্ষা করছেন, আবার কোথাও নাইটগার্ড বা অভিভাবকরা দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাকেরগঞ্জ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাকির নামের এক অভিভাবক বলেন, “দাবি ন্যায্য হোক বা যৌক্তিক হোক, পরীক্ষার সময় শিক্ষকের কর্মবিরতি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।”
কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষক কামরুন নাহার মারিয়াম বলেন, “আমাদের যৌক্তিক তিনটি দাবি মেনে নিলে হবে। আমরা চাই না কোনো শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ব্যাহত হোক। তাই আমরা নিরুপায় হয়ে কর্মবিরতিতে নেমেছি।”
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, “বার্ষিক পরীক্ষা একটি সিডিউল পরীক্ষা। ১ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ঠিক এই সময় আন্দোলনে যাওয়া নৈতিকভাবে ঠিক হয়নি।”
শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে পুরো উপজেলায় পরীক্ষার পরিবেশ অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।