আবুলহাশেম
রাজশাহী ব্যুরোঃ
“‘আমিই রোকেয়া’—এই বাক্যের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেক ব্যাপক,” মন্তব্য করে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. আ.ন.ম. বজলুর রশীদ বলেন, “১০০ বছর আগে বেগম রোকেয়া যে সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন, সেই পথ ধরে আজ আমরা নতুন এক অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছি।”
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে আলোচনা সভা এবং অদম্য নারী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার।
তিনি বলেন, আজকের নারীরা শিক্ষায়, কর্মজীবনে, আন্দোলন–সংগ্রামে সব ক্ষেত্রেই অসামান্য সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধে ডা. সিতারা বেগম, তারামন বিবিসহ অসংখ্য নারীর অবদান স্মরণ করে তিনি বলেন, “২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানেও নারীরা আন্দোলনকে বেগবান করেছেন। সফলতা ও সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ সমাজে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত।”
অদম্য নারীদের সংগ্রামের গল্প শুনে তিনি আরও বলেন, “এগুলো যেন উপন্যাসের চরিত্র—বাস্তবে তারা কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমান সফলতায় পৌঁছেছেন। এই গল্পগুলো আরও নারীদের অনুপ্রাণিত করবে।”
তিনি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর, তথ্য অধিদফতর, বেতার, টেলিভিশন ও গণমাধ্যমকর্মীদের অদম্য নারীদের জীবনী নিয়ে ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি তৈরির আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈমুল হাছান
সিভিল সার্জন ডা. এস. আই. এম. রাজিউল করিম
স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শবনম শিরিন।
৫টি ক্যাটাগরিতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে ৩ জন এবং জেলা পর্যায়ে ৫ জনসহ মোট ৮ নারীকে ‘অদম্য নারী’ হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা।
অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী: মোসা. হাছিনা ইয়াসমিন (হড়গ্রাম বাজার)
সফল জননী: মোসা. নুরজাহান বেগম (শালবাগান পাওয়ার হাউস মোড়)
নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন থেকে জয়ে উদাহরণ নারী: মোসা. শারমিন বেগম (দাসপুকুর)
অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী: মোসা. হাছিনা ইয়াসমিন (হড়গ্রাম বাজার)
শিক্ষা ও চাকরিতে সফল নারী: সুমনা সরকার (পুঠিয়া, পচামাড়িয়া)
সফল জননী: মোসা. রাশেদা বেগম (মোহনপুর, মহব্বতপুর)
নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন জয়ী নারী: মোসা. রাজিয়া খাতুন (চারঘাট, মেরামতপুর)
সমাজ উন্নয়নে অবদান: মোসা. আরিফা জেসমিন (বাঘা, মুর্শিদপুর)
অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও প্রিন্ট–ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।