নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই টঙ্গিরচর মোড় এলাকার ১৫ বছর ধরে ভোগদখলকৃত জমি গোপনে বিক্রি, দখলের চেষ্টা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর ২টায় ভুক্তভোগী পরিবার, এলাকাবাসী ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণে সিংদই টঙ্গিরচর মোড়ে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আব্দুল কাইয়ুমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার শ্যালক হাবিবুর রহমান হাবিব। এসময় উপস্থিত ছিলেন কাইয়ুমের পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
লিখিত বক্তব্যে মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে তিনি প্রতিবেশী মরহুম কফিল উদ্দিন ভূঁইয়ার কাছ থেকে সিংদই মৌজার বিআরএস খতিয়ান নং ৬৭৩, দাগ নং ৫৮০৬, শ্রেণী ‘কান্দা’—মোট ১৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে দখলে নেন। এরপর থেকেই সেখানে ঘরবাড়ি, দোকান, গাছপালা ও পুকুর খননসহ শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন। তবে দলিল সম্পন্ন হওয়ার আগেই কফিল উদ্দিন মারা গেলে তার ওয়ারিশরা নানা অজুহাতে দলিল প্রদান না করে টালবাহানা শুরু করেন। নামজারির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নিলেও দলিল সম্পন্ন করা হয়নি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে কফিল উদ্দিনের ছেলে মো. তামিম দারী গোপনে তার ভোগদখলকৃত জমির ৮ শতাংশ অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এর মধ্যে ২ শতাংশ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয় সরকারি চাকরিজীবী মো. আজহারুল ইসলামের কাছে এবং আরও ২ শতাংশ একই মূল্যে বিক্রি হয় সরকারি চাকরিজীবী মো. নাছিমুল আলমের কাছে। অবশিষ্ট ৪ শতাংশ জমি বিক্রি করা হয় স্থানীয় সোহাগ ও সোহেলের কাছে।
কাইয়ুম অভিযোগ করেন, নতুন দলিলগ্রহীতারা নিয়মিত তাকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “তারা আমার ঘরবাড়ি ও দোকানপাট গুড়িয়ে দেবে, আমাকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবে—এমন হুমকি দিচ্ছে নিয়মিত।”
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি ৯ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর জমির নামজারি স্থগিতের আবেদন করেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় পরিবারসহ তিনি মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কাইয়ুম পরিবার স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তাদের দাবি, দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমিটি ন্যায় বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার নামে রেজিস্ট্রি প্রদান করা এবং পরিবারের জানমাল রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।