মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে শেরপুরে যথাযোগ্য মর্যাদা, গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বিজয়ের স্মরণে আজ ভোরে দিবসটির সূচনা হয় ঐতিহ্যবাহী আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে।
দিবসের প্রথম প্রহরে ভোর ৬টা ৩৮ মিনিটে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির সূচনা করা হয়। এ সময় পুরো শহরে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেরপুর শহরের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তরফদার মাহমুদুর রহমান। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাঁদের অবদান স্মরণ করে নীরবতা পালন করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং সমাজের সর্বস্তরের জনগণ। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে স্মৃতিস্তম্ভ এলাকা এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, “১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। মহান বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন এবং এটি আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদার প্রতীক।” তিনি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শেরপুর জেলা প্রশাসনের গৃহীত এসব কর্মসূচি নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবস বাঙালি জাতির জন্য গৌরব ও অহংকারের দিন। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ঐক্য, ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মূল্য কতটা মহান।