নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শেষ হতে না হতেই শীতের শুরু থেকেই শুরু হয় ব্যাপক পুকুর খননের কার্যক্রম। যত্রতত্র ও অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফসলি জমি ও আমবাগান কেটে নির্বিচারে পুকুর খননের কারণে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষিজমি দীর্ঘ সময় পানিতে তলিয়ে থাকায় জমি অনাবাদী হয়ে পড়ছে এবং চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে পুকুর খনন করলেও প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরও বন্ধ হচ্ছে না পুকুর খননের এই কার্যক্রম।
বর্তমানে বাঘা উপজেলার আড়পাড়া, বলিহার ও তেঁথুলিয়া সিকদারপাড়া এলাকায় অন্তত তিনটি নতুন পুকুর খননের কাজ চলমান রয়েছে। এসব পুকুরের মাটি পরিবহনের কারণে সরকারি সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি আশপাশের এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বলিহার গুচ্ছগ্রামের পূর্ব পাশের রাস্তা দিয়ে উত্তর দিকে ট্রলি চালক জহুরুল ও মিঠুর নেতৃত্বে প্রকাশ্যে পুকুর খননের মাটি পরিবহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গেলে তারা প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
স্থানীয়রা জানান, অতিরিক্ত মাটি পরিবহনের ফলে রাস্তাটি বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সিকদারপাড়া গ্রামের একটি পুকুর নওটিকা গ্রামের নাজিমের নেতৃত্বে খনন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বলিহার গুচ্ছগ্রাম এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বর্ষা এলেই চারপাশে পানি জমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। একদিকে কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশের ওপরও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পুকুর রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবিহা সুলতানা ডলি বলেন, “গত রবিবার একটি অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, অপরিকল্পিত ও অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে দ্রুত কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে কৃষি, পরিবেশ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতি আরও বাড়বে।