আবুল হাশেম
রাজশাহী ব্যুরো :
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে সড়ক, হাট-বাজার ও খোলা মাঠ। সকাল ৮টা পেরিয়েও সূর্যের দেখা না মেলায় হিমেল বাতাসে স্থবির হয়ে পড়ে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম।
শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকদের অনেকেই কাজে বের হতে পারছেন না। কেউ ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ঘরবন্দি, আবার কেউ কাজ না পেয়ে দিন কাটাচ্ছেন অনিশ্চয়তায়। একদিনের আয়ে যাদের সংসার চলে, তাদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম উৎকণ্ঠা।
অন্যদিকে ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষদের দুর্ভোগ আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে অনেকেই ফুটপাত কিংবা খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রাত পার করছেন। পুরোনো ও ছেঁড়া কাপড় গায়ে জড়িয়ে শিশুদের বুকে নিয়ে কাঁপছে অসহায় মায়েরা। তাদের কাছে শীত কেবল একটি ঋতু নয়, বরং টিকে থাকার কঠিন সংগ্রাম।
শীতের প্রভাবে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে অসুস্থতার হারও বেড়েছে। সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, এ বছর হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় মানুষ প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পায়নি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েকদিন শীত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখন সবচেয়ে বড় মানবিক দায়িত্ব বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল। তারা সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।