অনলাইন ডেস্ক | লাখ লাখ মানুষের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার দুপুর ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক।
উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ দেশের এই বর্ষীয়ান নেত্রীর শেষ জানাজায় শরিক হন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। দলমত নির্বিশেষে আপসহীন এই নেত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন সর্বস্তরের মানুষ।
তারেক রহমানের আবেগঘন বক্তব্য জানাজার পূর্বে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এক হৃদয়স্পর্শী বক্তব্য রাখেন মরহুমার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। তিনি বলেন, "সন্তান হিসেবে আমার মায়ের সব ঋণের দায়ভার আমি আমার কাঁধে তুলে নিলাম।" দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তাঁর মা যদি জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে কাউকে কোনো মনোকষ্ট দিয়ে থাকেন, তবে যেন সবাই তাঁকে ক্ষমা করে দেন—এই বলে তিনি দেশবাসীর কাছে বিনীত প্রার্থনা করেন। তারেক রহমানের এই বক্তব্য উপস্থিত লাখো মানুষের মাঝে শোকের আবহ আরও বাড়িয়ে দেয়।
শোকার্ত মানুষের ঢল সকাল থেকেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও এর আশপাশের এলাকা শোকার্ত মানুষের ঢলে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের চোখেমুখে ছিল প্রিয় নেত্রীকে হারানোর গভীর শোক। জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরহুমার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বনানী কবরস্থানের উদ্দেশে, যেখানে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
রাষ্ট্রীয় শোক ও দাফন উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর প্রয়াণে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে এবং বুধবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি পালিত হচ্ছে। এছাড়া প্রিয় নেত্রীর মৃত্যুতে বিএনপি দেশব্যাপী সাত দিনের শোক কর্মসূচি পালন করছে।