নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর:
শেরপুরে ২০২৫ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হওয়া পরিবারের মাঝে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দ্বিতীয় পর্যায়ের সঞ্চয়পত্র বিতরণ করা হয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, যিনি অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন।
সঞ্চয়পত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোসা. হাফিজা জেসমিন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া, শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহমেদ, নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আক্তার ববি, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশরাফুল আলম রাসেল, নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলা প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল শ্রীবরদী উপজেলার শহীদ আসাদুল্লাহর পরিবারের হাতে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেওয়া। জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে শহিদরা চিরকাল আমাদের প্রেরণার উৎস। তাদের পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়বদ্ধতা।”
এর আগে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দুই দফায় মোট ১৩ জন শহিদ পরিবারের প্রত্যেকের হাতে ১০ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিতরণ করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসন এই সঞ্চয়পত্র প্রদানের মাধ্যমে শহিদ পরিবারের মাঝে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট।
সঞ্চয়পত্র গ্রহণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে যথার্থ এবং প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের শহিদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই ধরনের সহায়তা নতুন শক্তি যোগাচ্ছে।”
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানান, এই ধরনের আর্থিক সহায়তা শহিদ পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং তাদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। জেলা প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, দেশের অন্য কোনও শহিদ পরিবারের প্রতি এই ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এই কার্যক্রমে জেলা প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা রয়েছে। শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সামাজিক ও আর্থিক উন্নয়নে এরকম উদ্যোগ আগামীতে আরো জোরদার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।