স্টাফ রিপোর্টার: শরিফা বেগম শিউলী
রংপুর নগরীর ব্যস্ততম সড়ক জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে সাতমাথা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে বেহাল অবস্থায়। খানাখন্দ, ভাঙাচোরা ও জমে থাকা পানিতে চলাচল হয়ে পড়েছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ বারবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও রংপুর সিটি কর্পোরেশন নেয়নি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকাবাসী।
এই অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ জানাতে রোববার (২০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় সাতমাথা রেলগেট সংলগ্ন মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের পাশে আয়োজন করা হয় রংপুর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের প্রতীকী গায়েবানা জানাজা। এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচিতে অংশ নেন এলাকার তরুণ সমাজ।
গায়েবানা জানাজা পরিচালনা করেন স্থানীয় মাদ্রাসাছাত্র রাহুল ইসলাম। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজিমুজ্জামান হৃদয়, প্রান্ত হোসেন, মো. নাঈম, সাকিব হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, হোসাইন, সৈকত ইসলাম, তানভীর ইসলাম, নাঈম হক, মাহিমসহ আরও অনেকে।
সাতমাথার বাসিন্দা রাজিমুজ্জামান হৃদয় বলেন, “দিনের পর দিন সড়কটির ভয়াবহ অবস্থার কোনো সমাধান হয়নি। সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে থাকলেও তাদের যেন কিছু যায়-আসে না। আমরা মনে করি, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ মৃত। তাই তাদের জন্য প্রতীকী গায়েবানা জানাজার আয়োজন করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “বিগত সময়েও বিভিন্নভাবে সিটি কর্পোরেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি। তারা কেবল আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি।”
স্থানীয়রা জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। অথচ দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তাটির সংস্কার হয়নি। জলাবদ্ধতা, গর্ত আর ভাঙাচোরা রাস্তায় সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। স্কুলগামী শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের চলাচল তো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
তরুণদের এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই একে জনদুর্ভোগের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
এলাকাবাসী দ্রুত এই সড়ক সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ না এলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।