আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরো:
সারাদেশে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় রাজশাহীতে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর (২০২৫) বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন কৌশিক ইসলাম অপূর্ব।
কৌশিক ইসলাম অপূর্ব জানান, “৫ আগস্টের ঘটনার পর আমি দীর্ঘদিন শারীরিক ও মানসিকভাবে কষ্টে ছিলাম। তখন মামলা করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। পরে শারীরিকভাবে কিছুটা স্বাভাবিক হলে এবং প্রমাণ সংগ্রহ করতে সক্ষম হই, তখন মামলা করার সিদ্ধান্ত নিই। হ্যাঁ, মামলা করতে দেরি হয়েছে, তবে অন্যায়কারীরা যেন শাস্তি পায়—এই বিশ্বাস থেকেই আমি আজ মামলা করেছি। ন্যায়বিচার পাবো, এই আশাতেই সামনে এগোচ্ছি।”
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লবের আগে স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের তাণ্ডবে সারাদেশে গণহত্যা, হামলা, গুলি, বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে বহু মানুষ প্রাণ হারান এবং অসংখ্য মানুষ গুরুতর আহত হন। রাজশাহীতেও আন্দোলন দমাতে দেশীয় অস্ত্র, বোমা ও গুলি চালানো হয়েছিল। রক্ত ঝরলেও ছাত্রজনতা ও সাধারণ মানুষ বিজয়ের পথে অগ্রসর হয়। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
মামলায় মোট ১৩৫ জনকে নামীয় আসামি এবং আরও ৫০০–৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। নামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুল জামান লিটন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ রনি, রাজশাহী-১ আসনের সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান দীপন, শুটার জহিরুল হক রুবেল, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রকি কুমার ঘোষসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বহু নেতাকর্মী। কেউ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কেউ চিকিৎসা সেবার সঙ্গে যুক্ত, আবার কেউ নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। অনেকে বর্তমানে পলাতক থাকলেও কেউ কেউ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছায়ায় প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন।
বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, “মামলাটি শক্তপোক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে সময় নিয়ে করা হয়েছে। কিছু আসামি কারাগারে রয়েছেন, কিছু পলাতক। বাকি যাদের নাম আছে, তাদের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”