আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার জামগ্রাম এলাকার মনিয়া আক্তার বর্ষা খাতুন (২২) প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন দুর্গাপুর উপজেলার মৃত আয়ুব মন্ডলের ছেলে নাহিদ হোসেনকে (২৭)। কিন্তু সেই প্রেমের সংসার টিকলো না, শেষ হলো এক নির্মম পরিণতিতে। পরিবারের দাবি—বর্ষাকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রায় চার বছর আগে দুই পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন নাহিদ ও বর্ষা। সংসারে এক পুত্রসন্তানও জন্ম নেয়। তবে বিয়ের শুরু থেকেই নাহিদের পরিবারের হাতে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন বর্ষা। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বহুবার বাবার বাড়িতে ফিরে আসলেও শ্বশুরপক্ষের চাপে আবারও ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি।
গত ১০ সেপ্টেম্বর আবারও বর্ষার ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। এরপর তিনি বিষপান করেন বলে দাবি শ্বশুরপক্ষের। তবে বর্ষার পরিবারের অভিযোগ—তাকে জোর করে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকলেও তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। বরং ফোনে ডেকে পাঠানো হয় বর্ষার পিতাকে। পরে তিনি মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক বর্ষাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত বর্ষার পিতা মনিরুল ইসলাম চারজনকে আসামি করে দুর্গাপুর থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন—স্বামী নাহিদ ইসলাম, শাশুড়ি রেশমা বেগম, দেবর শান্ত এবং মামা আজাদ।
বর্ষার পরিবার অভিযোগ করেছে, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যা। নিহতের মা নাজলী বেগম বলেন, “আমার মেয়েকে তারা দীর্ঘদিন নির্যাতন করেছে। চিকিৎসা না দিয়ে ফেলে রেখেছে। এটা সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড।”
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুল ইসলাম জানান, মামলাটি তদন্তাধীন এবং আসামিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
এভাবেই শেষ হলো একটি প্রেমের সংসারের গল্প, রেখে গেল তিন বছরের এক অনাথ সন্তান।