মনজু হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মাইদুল ইসলাম শাহ-এর বিরুদ্ধে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম, কাজ না করেই বিল উত্তোলন, কমিশন গ্রহণ এবং অফিসে নিয়মিত উপস্থিত না থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কর্মকর্তা দাবি করেছেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি তেঁতুলিয়া থেকে বদলির জন্য আবেদন করেছি।”
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, উপজেলার টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দের অর্থে নামমাত্র কাজ দেখিয়ে বিল তোলা হচ্ছে। বাংলাবান্ধা, শালবাহান, বুড়াবুড়ি ও ভজনপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলেও বিল অনুমোদন করেছেন পিআইও।
অভিযোগ রয়েছে, পিআইও তার নিজ জেলা নীলফামারী থেকে অফিস করছেন। অনেক সময় সকাল ১০টার পর অফিসে আসেন, আবার বিকেল ৩টার মধ্যেই ত্যাগ করেন। এতে সরকারি কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দেবনগড়ের সিপাহীপাড়া সড়ক সংস্কারে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, মাগুরমারী এলাকায় ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৬ টাকা, বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের জায়গীরজোত তারিফের বাড়ি হতে হানিফের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ২ লাখ টাকা, একই ইউনিয়নের সর্দারপাড়া গুনি মুন্সির বাড়ি থেকে এমাজের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৫.৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ঝাড়ুয়াপাড়া ফজলুল হকের বাড়ি থেকে জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, এবং ভজনপুর ডিগ্রি কলেজে মাটি ভরাটে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল।
অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রকল্পে নামমাত্র মাটি ছিটিয়ে বা ঘাস পরিষ্কার করেই বিল তোলা হয়েছে— যা প্রকল্প বাস্তবায়নের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করেছে।
যদিও কিছু প্রকল্প সভাপতি দাবি করেছেন, কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে তারা স্বীকার করেছেন যে “অফিস খরচ” বাবদ পিআইওকে টাকা দিতে হয়েছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা জুড়ে এই বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত ও অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।