মনজু হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড়
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মুনিয়ারা খুঁকি (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী জুলফিকার আলীর (৪২) বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের সর্দারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই জুলফিকার ও তার পরিবারের সদস্যরা খুঁকির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুঁকির শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে প্রথমে তাকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুঁকি মারা যান।
পরদিন সকালে খুঁকির পরিবারকে জানানো হয়, তিনি “ডায়াবেটিস শূন্য হয়ে” মারা গেছেন। তবে মরদেহের গোসলের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবার হত্যার অভিযোগ তোলে।
খুঁকির বাবা মহিদুল ইসলাম বলেন,
“বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করত জুলফিকার ও তার পরিবার। তারা নির্যাতন করেই আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
খুঁকির চাচা সামিউল ইসলাম জানান,
“জুলফিকারের প্রথম স্ত্রীও নির্যাতনের কারণে সংসার ছেড়ে চলে গিয়েছিল। আমাদের ভাজতিকে দুই দিন ধরে না খাইয়ে অমানবিকভাবে মারধর করা হয়।”
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন,
“খুঁকির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জুলফিকারের বাবা-মাসহ তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান প্রধান বলেন,
“খুঁকিকে প্রায়ই মারধর করতো তার স্বামী। মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু পরে সেখানেই মারা যান তিনি। শরীরে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।”
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুলফিকারকে স্থানীয় জামায়াত নেতা হিসেবে উল্লেখ করে নানা পোস্ট দেখা গেছে। তবে ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি হামিদুল্লাহ বলেন,
“জুলফিকার আমাদের দলের কোনো পদে ছিলেন না, বর্তমানে সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত নন।”
সম্পাদকীয় মন্তব্য:
ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।