
আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, স্কুল, মসজিদ ও মাদ্রাসাসহ গ্রামের পর গ্রাম। এমন পরিস্থিতিতে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে শনিবার (১ নভেম্বর) উপজেলা সদরের চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন করেছেন পদ্মা পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ।
“নদী ভাঙন কবলিত গ্রামবাসী” ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম বিকুল, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল মোমিন, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালেক আদিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব রহমান, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির রহমান মুকুট, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন, স্থানীয় শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহিনুর রহমান শাহীনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।
স্থানীয় উত্তর মেরামতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন,
“চারঘাটের পিরোজপুর, গোপালপুর, চন্দনশহর, সাহাপুর ও বাঘার চক রাজাপুর গ্রামের হাজারো মানুষ পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে চরম ক্ষতির মুখে। তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙন থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে। শিক্ষার্থীরা ভয় নিয়ে স্কুলে যায়। ৭টি মসজিদ ও শত শত বাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় আছে।”
উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম বিকুল বলেন,
“বিগত সরকারগুলো প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দিয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ করেনি। বরং বালু তোলার কারণে ভাঙন আরও বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডও শুধু টালবাহানা করছে। আমরা স্থায়ী বাঁধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন,
“চারঘাটের মানুষ অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নোয়ায়নি। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু না হলে হাজার হাজার মানুষ নিয়ে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ঘেরাও করব।”
তিনি পানিসম্পদ উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলেন,
“রাজশাহীতে এসে বক্তৃতা দিলেই হবে না—কাজ করতে হবে। কাজ না করলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। চক রাজাপুর ইউনিয়নের মানুষ এখন তাবুর নিচে থাকে—এটা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না।”
অন্যদিকে, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান অঙ্কুর জানান,
“মানববন্ধনে উল্লেখিত এলাকাগুলো আমরা ইতিমধ্যে পরিদর্শন করেছি। একটি প্রকল্প পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।”