
মোঃ আমজাদ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
সারি সারি সমাধিতে জ্বলছে মোমবাতি, আলোকিত পুরো কবরস্থান। প্রিয়জনের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে নীরবে প্রার্থনা করছেন স্বজনেরা—এমনই দৃশ্য দেখা গেল সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটাপুর ইউনিয়নের পাথরঘাটা ক্যাথলিক মিশনের কবরস্থানে।
শুধু কবরস্থান নয়, আশপাশের খ্রিষ্টান পরিবারের ঘরবাড়িগুলোতেও জ্বলছিল মোমবাতির আলো। দিনটি ছিল প্রয়াত আত্মীয়স্বজনদের স্মরণে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিশেষ প্রার্থনার দিন।
পাথরঘাটা ক্যাথলিক মিশনের গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা শেষে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা সারিবদ্ধভাবে কবরস্থানে আসেন। এরপর প্রিয়জনদের কবরের পাশে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে, পবিত্র জল ছিটিয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে নীরবে প্রার্থনা করেন তারা।
আটাপুর ও কুসুম্বা ইউনিয়নের অন্তত তিনটি গ্রামে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের আত্মীয়স্বজনের কবরগুলোতে মোমবাতি প্রজ্বালন করে।
প্রার্থনায় অংশ নিতে আসা অনেকেই জানান, প্রতি বছর এই দিনে তারা মৃত স্বজনদের স্মরণে গির্জা ও কবরস্থানে জড়ো হন। সূর্যাস্তের পর কবরগুলো জ্বালানো মোমবাতির আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। যিশুর প্রতিকৃতির সামনেও শ্রদ্ধার প্রদীপ জ্বালানো হয়। তাদের বিশ্বাস—এই দিনে প্রয়াতদের জন্য প্রার্থনা করলে তাদের আত্মা শান্তি লাভ করে।
পাথরঘাটা এলাকার জয়িতা কুজুর বলেন,
“কয়েক মাস আগে আমার বাবা মারা গেছেন। আজ মায়ের সঙ্গে বাবার কবরের পাশে মোমবাতি জ্বালিয়ে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেছি।”
স্থানীয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা জানান, কবরস্থানটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার যদি কবরস্থানটি উঁচু করে বাউন্ডারি নির্মাণ করে দেয়, তবে তা ধর্মীয় অনুশীলনে সহায়ক হবে।
আটাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.স.ম. সামছুল আরেফিন চৌধুরী আবু জানান,
“মিশন থেকে কবরস্থান সংস্কারের বিষয়ে কোনো আবেদন করা হয়নি। তবে পরবর্তী সরকারি বরাদ্দ এলে কবরস্থানটিতে বাউন্ডারি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”