হাবিবুর রহমান
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তদের নৃশংস হামলায় ছকিনা বেগম (৫০) নামে এক গৃহিনী নিহত হয়েছেন। শনিবার (ভোররাতে) লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মটকা মসজিদ এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় চরম আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডটি ডাকাতির সময় বাধা দেওয়ার কারণে নাকি পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে—তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহতের স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে মুখোশ পরিহিত কয়েকজন দুর্বৃত্ত ছাদ বেয়ে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে তারা ছকিনা বেগমের শয়নকক্ষে ঢোকে। এ সময় তিনি তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহত ছকিনা বেগমের স্বামী সাফিউল্লাহ প্রায় তিন বছর আগে মারা যান। তাদের দুই সন্তান বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। ঘটনার সময় তিনি ঘরে একাই ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে ঘর থেকে কোনো স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা বা মূল্যবান মালামাল লুটের সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই ধারণা করছেন, ডাকাতির সময় বাধা দেওয়ার কারণে অথবা পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজাউল হক বলেন,
“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পূর্বশত্রুতা কিংবা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। তবে ডাকাতির বিষয়টিও তদন্তের বাইরে রাখা হচ্ছে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
পুলিশ জানায়, আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদসহ বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।









