মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি :
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রেরিত সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অভিযোগে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক (শিক্ষক প্রতিনিধি) নওশেদ আলী এবং অফিস সহকারি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ ওঠে।
১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া, রাহিদুল ইসলাম, মোবাস্সার, আবু বকর সিদ্দিক, মুন্নি, রিয়াজুল ইসলামসহ অনেকে জানান, তাদের মাঝে বিনামূল্যের সরকারি বই সম্পূর্ণ বিতরণ করা হয়নি। কেজি দরে বাইরে বই বিক্রি করা হয়েছে। এখনো তাদের ২-৩টি বই হাতে আসেনি। উপরন্তু বই প্রদানের সময় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগকে গুরুতর অনিয়ম আখ্যা দিয়ে বলেন, বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার হরণের শামিল। তারা দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী হয়তো সময়মতো বই হাতে পায়নি। তবে বই বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মো. রহুল আমিন তালুকদার বলেন, “অভিযোগটি গুরুতর। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “সরকারি বই বিনামূল্যে বিতরণের কথা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া বা বই বিক্রি করা আইনগত অপরাধ। তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিভাবকরা বলেন, “সরকারের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ দায়িত্বশীল শিক্ষক-কর্মচারীদের এ ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
শিক্ষার্থীরা দ্রুত বাকি বই বুঝে পাওয়া এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
স্থানীয়রা মনে করছেন, সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ শিক্ষাঙ্গনে অনিয়মের চিত্রই নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার হরণেরও বহিঃপ্রকাশ।