নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে এখন থেকে একজন গ্রাহক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল সিম কার্ড নিবন্ধন করতে পারবেন। এতদিন বিভিন্ন ধরনের পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সব মিলিয়ে ১৫টি সিম নেওয়ার সুযোগ থাকলেও এখন সেই সংখ্যা কমিয়ে আনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ১৯ মে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি জানায়, এই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে এবং শিগগিরই তা কার্যকর হবে।
বিটিআরসির পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, অধিকাংশ গ্রাহক এত সংখ্যক সিম ব্যবহার করেন না। অপরদিকে, অতিরিক্ত সিম ব্যবহারে জাতীয় নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা, অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের অপব্যবহার, এবং অপারেটরদের অনিয়মিত প্রতিযোগিতা বেড়ে যাচ্ছে। এতে দেশের সাইবার নিরাপত্তা ও মোবাইল নেটওয়ার্কের স্বচ্ছতা হুমকির মুখে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক অনুশীলনের উদাহরণ টেনে বিটিআরসি জানায়:
ভারতে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৯টি
পাকিস্তানে ৫টি
মালদ্বীপে ১০টি
ইন্দোনেশিয়ায় ৩টি সিম ব্যবহার করতে পারেন।
এই প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশে সিম সীমা ১০টি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশে গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক এই চারটি মোবাইল ফোন অপারেটর রয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৬২ লাখ ২০ হাজার।
বিটিআরসির তথ্যমতে, প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লাখ সিম বিক্রি হয়। এছাড়া, প্রতিদিনই একই ব্যক্তির নামে একাধিক সিম রেজিস্ট্রেশনের অনিয়ম ধরা পড়ছে। বিশেষ করে কিছু অসাধু খুচরা বিক্রেতা আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করে অবৈধভাবে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করে আসছে, যা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।
এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের ৬৭ লাখ সিম বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
এর আগে, ২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে ১৫টি সিম নিবন্ধনের নির্দেশনা দিয়েছিল বিটিআরসি। ২০২২ সালে নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, এনআইডি ছাড়াও পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়েও সিম নেওয়া যাবে—সর্বোচ্চ ১৫টি। এবার তা ১০টি সিমে সীমিত করা হচ্ছে।