আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীর বাঘা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে হ্যাকিং ও প্রতারণা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত মোট আটজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দিনব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত কয়েকজন আসামি গা-ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে ছিল। বিশেষ করে হ্যাকিং ও প্রতারণা মামলার আসামিদের ধরতে বাঘা থানা পুলিশ গত কয়েকদিন ধরে বিশেষ নজরদারি চালিয়ে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে শনিবার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন— (১) মোঃ মিনারুল ইসলাম (২২), পিতা-মো: জাবেদ আলী, (২) মো: মিজানুর রহমান পলাশ (২৮), পিতা-মো: মামুন আল হক, (৩) মো: আনারুল ইসলাম (৩৮), পিতা-মো: রুহুল আমিন, সাং-হাবাসপুর, (৪) মো: পিয়াস ইসলাম (২০), পিতা-মো: তেতুল উদ্দিন, সাং-উত্তর মিলিক বাঘা, (৫) মো: আলামিন ওরফে আল আমিন (২২), পিতা-মো: মজিবর রহমান, সাং-মুর্শীদপুর, (৬) মো: লালন ওরফে আনারুল ইসলাম (৩৪), পিতা-মৃত-আলীম ওরফে আলী মন্ডল, সাং-কিশোরপুর বিলপাড়া, (৭) মো: রাজীব গাজী (২৪), পিতা-মৃত-আ: কাশেম গাজী, সাং-ঝিনা এবং (৮) মো: বিদ্যুত প্রামানিক ওরফে গাদি (৪৫), পিতা-আহম্মদ প্রামানিক, সাং-কেশবপুর।
এদের মধ্যে হ্যাকিং ও প্রতারণা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ৫ জন, অন্যান্য জিআর মামলার ১ জন, সিআর মামলার ১ জন এবং নিয়মিত মামলার একজন আসামি রয়েছেন। পুলিশ জানায়, প্রতিটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর আসামিরা এলাকায় না থাকায় তাদের ধরতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। তবে পুলিশের কৌশলগত অভিযানে অবশেষে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
বাঘা থানার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চক্রের সক্রিয় সদস্য। এরা সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলে আসছিল। আবার কেউ কেউ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অনলাইন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
শনিবার দিনভর অভিযান শেষে রাতে আটককৃত আটজন আসামিকে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন মামলায় বছরের পর বছর পলাতক অবস্থায় আছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। বাঘা থানার ওসি বলেন, “জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করতে আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের মুখোমুখি করা হবে।”
এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে মামলার আসামিরা গ্রামে-গঞ্জে লুকিয়ে থেকে বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছিল। তাদের গ্রেফতারে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেয়েছেন এবং আশা করছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।