নীলফামারী প্রতিনিধি:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় সাজসজ্জার রঙিন আয়োজন চলছে। ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আনন্দের মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা উপজেলার ৭৬টি পূজামণ্ডপে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক প্রতিনিধি অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেন, “দুর্গাপূজা শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নয়, এটি এখন সার্বজনীন আনন্দের উৎসব। ডিমলা উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তার পাশাপাশি বিদ্যুৎ, স্বেচ্ছাসেবক, সিসি ক্যামেরা ও আলোকসজ্জার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই সবাই মিলেমিশে সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করুন।”
ডিমলা থানার ওসি ফজলে এলাহী জানান, পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তিন ধাপের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে—পূজার প্রস্তুতি, পূজাকালীন সময় ও প্রতিমা বিসর্জন। “এবার ৭০টি মণ্ডপে প্রতিমা বিসর্জন হবে। প্রতিটি মণ্ডপে ৬ জন আনসার ও ৩ জন গ্রাম পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পূজার সময় টহল জোরদার করতে পাঁচটি মোবাইল টিম, ফিক্সড পুলিশ টিম, ডিবি পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম এবং সাদা পোশাকে ডিএসবি পুলিশ মাঠে থাকবে। এছাড়া প্রতিটি মণ্ডপ ও আশপাশের এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। চুরি, ছিনতাই বা ইভটিজিং দমন এবং গুজব বা উস্কানি রোধেও সোশ্যাল মিডিয়ায় কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে।”
সভায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, নির্ধারিত সময়ে প্রতিমা বিসর্জন এবং বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ওসি ফজলে এলাহী আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নেই। আমরা চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের দুর্গাপূজা হোক শান্তিপূর্ণ, আনন্দঘন ও উৎসবমুখর। যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করতে পারেন।”