মোঃ আমজাদ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কামারপল্লীগুলোতে কুরবানির ঈদ ঘিরে এবার নেই আগের মতো কর্মচাঞ্চল্য ও ব্যস্ততা। রাস্তার পাশে পলেথিনের ছাউনি টাঙিয়ে কামারেরা যেখানে একসময় টুংটাং শব্দে রাতদিন কাজ করতেন, এখন সেখানে নীরবতা। ঈদের আমেজ যতই ঘনিয়ে আসছে, কামারদের হাতে ততই অলস সময় জমছে।
স্থানীয় কামার বিপুল চন্দ্র কর্মকার বলেন, “আগে ঈদের আগে এত কাজ থাকত যে রাতে ঘুমানোরও সময় পেতাম না। এখন কয়লার দাম, লোহার দাম বেড়ে গেছে। আর আগের মতো চাহিদাও নেই। বাপ-দাদার পেশা বলে ধরে আছি, কিন্তু লাভ তো দূরের কথা, লোকসান গুনতে হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, মানুষ এখন আর দেশি দা-বঁটি কিনতে চায় না। সস্তা চাইনিজ পণ্য আর ফ্যাক্টরির তৈরি ছুরি-বঁটি বাজার দখল করে ফেলেছে। ফলে তাঁদের মতো হস্তশিল্প নির্ভর কর্মকাররা বিপাকে পড়েছেন।
পাঁচবিবির বিভিন্ন কামারপল্লী ঘুরে দেখা গেছে, হাতে গোনা কয়েকজন কামার ধীরগতিতে কিছু দা, ছুরি, বঁটি তৈরি করছেন। নেই আগের মতো কাস্টমারের ভিড়, নেই ঈদের আগে রাত জেগে কাজ করার সেই তাড়াহুড়ো। এক সময়ের ব্যস্ত এই পল্লীগুলো যেন এখন স্মৃতিচিহ্নে পরিণত হচ্ছে।
স্থানীয় কামাররা মনে করেন, সরকারিভাবে উদ্যোগ না নেওয়া হলে এই পেশা বিলুপ্তির পথে যাবে। তাঁরা সরকারি প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ এবং হস্তশিল্প সংরক্ষণের দাবি জানান।
দেশীয় হস্তশিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া ও বাজার প্রতিযোগিতার চাপে হারিয়ে যেতে বসেছে কামারদের প্রাচীন পেশা। কুরবানির ঈদেও যেখানে কাজের চরম ব্যস্ততা থাকার কথা, সেখানে পাঁচবিবির কামাররা এবার সময় পার করছেন হতাশায় আর অলসতায়।