আবুল হাশেম
রাজশাহী ব্যুরো :
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গড়গড়ী ইউনিয়নের আশরাফপুর গ্রামে সংঘবদ্ধ বিকাশ ও ইমো প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী জেলা পুলিশের একটি সম্মিলিত টিম। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মো. জুবায়ের হাসান শিশির (২১), মো. জাহিদ হাসান সিজান (১৯), মো. শরিফুল ইসলাম সিজান (৩৪) ও মো. রতন আলী (২৫)। এদের মধ্যে জুবায়ের হাসান শিশির ও জাহিদ হাসান সিজান আশরাফপুর গ্রামের মো. ফারুক হোসেন লিটনের ছেলে, শরিফুল ইসলাম সিজান একই গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং রতন আলী বাঘা উপজেলার খানপুর গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজশাহী জেলা পুলিশের একাধিক টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। অভিযানে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৫ টাকা, ১১টি বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল ফোন, ১৬টি সিম কার্ড এবং ৬টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
রাজশাহী জেলা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী ও নাটোর জেলার লালপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় ছিল। তারা বিকাশ, ইমো, ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিত। বিশেষ করে তারা নিজেদের সেনাবাহিনী, পুলিশ বা প্রশাসনের সদস্য পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছ থেকে বিকাশে অর্থ আদায় করত।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে পরিচালিত এ অভিযানে একটি সুসংগঠিত সাইবার প্রতারণা নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানায় পুলিশ।
রাজশাহী জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “এই চক্রটি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইবার অপরাধে জড়িত ছিল। তাদের কার্যক্রম মূলত বিকাশ ও ইমো অ্যাপের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে।”
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে—অপরিচিত ব্যক্তি বা নম্বর থেকে কেউ বিকাশ বা ইমোতে যোগাযোগ করলে এবং সেনাবাহিনী বা প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।