
আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরো:
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বহুল আলোচিত অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সদস্যদের হামলায় এক আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তিনজন অ্যাম্বুলেন্স চালককে আটক করে।
আহত আনসার সদস্যের নাম ফিরোজ সরকার। আটক তিনজন হলেন—অ্যাম্বুলেন্স চালক রজব, আব্দুল্লাহ ও মারুফ।
আনসার সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে রামেক হাসপাতালের ৪ নম্বর ফটকে দায়িত্বে ছিলেন ফিরোজ সরকার। এই ফটক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও একটি অ্যাম্বুলেন্স জোর করে প্রবেশ করে। ফিরোজ বাধা দিলে চালক জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে রোগী তোলা শুরু করেন। এ সময় ফিরোজ ঘটনাটি জানতে চাইলে কথা কাটাকাটি হয় এবং অন্য এক চালক এসে ফিরোজকে ঘুষি মারে। এতে তাঁর নাক ফেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
ঘটনার পর অন্যান্য আনসার সদস্যরা এগিয়ে এসে দুই চালককে আটক করলেও কিছুক্ষণ পর বাকি চালকেরা এসে জোর করে তাদের ছাড়িয়ে নেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তিনজনকে পুনরায় আটক করে।
রামেক হাসপাতালের বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে রোগী ও মরদেহ পরিবহনের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অনিয়মে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়।
সম্প্রতি সিন্ডিকেটের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড বন্ধে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার ও র্যাব-৫ এর অধিনায়কের কাছে লিখিতভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
আনসার সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় হাসপাতাল পরিচালক বলেন,
“এই বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা অত্যন্ত বেপরোয়া ও অমানবিক। তারা প্রায়ই সন্ত্রাসী আচরণ করে। তিনজনকে আটক করা হয়েছে, মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অ্যাম্বুলেন্সটিও পুলিশ জব্দ করেছে।”
সাধারণ মানুষ মনে করেন, রাজশাহীর এই তথাকথিত “লাশবাহী গাড়ি সিন্ডিকেট” পুরোপুরি দমন না করা পর্যন্ত রামেকে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ভোগের অবসান হবে না।