
আবুল হাশেম, রাজশাহী:
রাজশাহীতে ভুয়া শিক্ষা সনদ ব্যবহার করে দলিল লেখকের লাইসেন্স করার অভিযোগে পবা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক শাহীন আলী এর লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুর রকিব সিদ্দিক বুধবার (১২ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, শাহীন আলী তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় একটি শিক্ষার্থী সনদ যাচাই না করে তা ভিত্তি করে দলিল লেখকের লাইসেন্স প্রদান করেছিলেন। পরে পবা সাব-রেজিস্ট্রার সনদটি শিক্ষা বোর্ডে যাচাই করার জন্য পাঠালে প্রথমে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভুলবশত “সঠিক” বলে প্রত্যয়ন দেন। এরপর সাব-রেজিস্ট্রার নিজেই সনদটি যাচাই করে ডেপুটি কন্ট্রোলার মো. মুনজুর রহমান খান নিশ্চিত করেন যে সনদটি ভুয়া।
এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে পবা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে। ভুয়া সনদে উল্লেখ ছিল—রোল নং ৬২৩৭১৩, রেজিস্ট্রেশন নং ৬১৭৩৮২, পাশের সন ১৯৯৭, বিদ্যালয় দারুশা উচ্চ বিদ্যালয়। শাহীন আলী এই সনদ ব্যবহার করে দলিল লেখকের লাইসেন্স প্রদান করেন।
সাব-রেজিস্ট্রার শাহীন আলী জানান, প্রথমে অনলাইন ও মোবাইল যাচাই করে সন্দেহ হওয়ায় সনদ শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়। প্রথম যাচাইতে “সঠিক” প্রত্যয়ন পাওয়ায় সন্দেহ আরও বৃদ্ধি পায়। পুনঃযাচাইয়ে সনদটি ভুয়া প্রমাণিত হয় এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
প্রথম যাচাইয়ের সময় বোর্ডের তিন কর্মকর্তা—রেকর্ড শাখা অফিসার আলমগীর হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারজানা লতা এবং মিন্টু—এর সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে সনদটি ভুলক্রমে “সঠিক” বলে প্রত্যয়ন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আ.ন.ম. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন,
“ঘটনা সম্পর্কে জানার পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
শিক্ষা বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যায়, এই ধরনের অনিয়ম বোর্ডের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং প্রয়োজন দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত।