
আলমগীর হোসেন সাগর
স্টাফ রিপোর্টার:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া এলাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে অধিকাংশ পরিবার বসবাস না করায় চরম শূন্যতার ছবি ফুটে উঠেছে। শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকল্পের অধিকাংশ ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা, উঠানে জন্মেছে ঝোপঝাড়, এবং সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আড্ডা স্থানীয়দের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নয়াপাড়া গ্রামে নির্মিত ঢাকা বিভাগের বৃহত্তম আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ ৮ একর ৯ শতাংশ জমির ওপর ১৪২টি পাকাঘর নির্মাণ করা হয়। উদ্বোধনের পর সুবিধাভোগীদের মধ্যে ঘর ও দুই শতাংশ জমির দলিল হস্তান্তর করা হলেও, কয়েক মাসের মধ্যে অধিকাংশ পরিবার অন্যত্র চলে যান। বর্তমানে ৬৭টি ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে, ৭৫টি ঘরে নিয়মিত বাস হলেও বাকি ঘরগুলোতে কেউ কেউ মাঝেমধ্যে আসে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ঘরগুলোতে বসবাস না করার কারণ হলো কাজের সুযোগ ও শিক্ষা-সুবিধার অভাব। প্রকৃত ভূমিহীনরা দাবি করেছেন, বারবার আবেদন সত্ত্বেও তারা ঘর পাননি। বরাদ্দপ্রাপ্ত অনেকের নিজস্ব বাড়িঘর থাকায় প্রকল্পের ঘরগুলো তালাবদ্ধ রেখেছেন। উদাহরণ হিসেবে নগরহাওলা গ্রামের কাজল মিয়ার ৩৩ নম্বর ঘরের নাম উল্লেখ করা হয়।
নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি আব্দুল লতিফের স্ত্রী নাজমা আক্তার জানিয়েছেন, রাতের বেলা তালাবদ্ধ ঘরের বারান্দায় মাদকসেবীদের উপস্থিতি প্রকল্প এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করছে। এছাড়া মসজিদের ইমামের বেতন পরিশোধের দায়িত্ব অল্প কয়েকজন বাসিন্দার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি দাবি করেছেন, ফাঁকা ঘরগুলো প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে পুনর্বণ্টন করা হোক।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, সরকারি বরাদ্দে স্কুল নির্মাণ করা হয়নি, এটি ব্যক্তি উদ্যোগে হয়েছে। কেউ অনিয়ম করে ঘর নিয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তদারকি বাড়ানো, অনিয়ম তদন্ত এবং ফাঁকা ঘরগুলো প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে পুনর্বণ্টন জরুরি। না হলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য—ভূমিহীনদের পুনর্বাসন—সম্পূর্ণ ব্যাহত হতে পারে।