আবুল হাশেম
রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীর অলকার মোড়ের আলোচিত আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে তার বিচার এবং তার দায়ের করা একটি মামলাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত ও ভিত্তিহীন’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতা শামসুল ইসলাম মিলু। শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহী বোয়ালিয়া পশ্চিম থানা বিএনপির সভাপতি শামসুল ইসলাম মিলু। তিনি অভিযোগ করেন, “গ্রীন প্লাজা প্রপার্টিজ” নামে মোস্তাফিজুর রহমান আবাসন ব্যবসার আড়ালে বহু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করে প্রতারণা করে আসছেন। এমনকি একই ফ্ল্যাট একাধিকবার বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মিলু জানান, তার ছোট ভাইয়ের বন্ধু আমিনুল ইসলাম ২০২৩ সালে গ্রীন প্লাজা প্রপার্টিজের একটি ফ্ল্যাটের জন্য মোস্তাফিজকে ২৭ লাখ টাকা দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও তিনি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেননি। টাকা ফেরত চাইলে মোস্তাফিজ ও তার সহযোগীরা ভয়ভীতি দেখান। একপর্যায়ে থানায় জিডির পর পুলিশের মধ্যস্থতায় একটি লিখিত আপসনামা হয় যেখানে তিন মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর বা টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দেন মোস্তাফিজ।
এরপর চুক্তির অধীনে মিলু নিজে আমিনুল ইসলামের পক্ষ হয়ে ফ্ল্যাটটি নিতে রাজি হন। কিন্তু এরপরই মোস্তাফিজ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন যেখানে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ২২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়।
মিলুর অভিযোগ, “মামলার ৫ নম্বর আসামি শাহরিয়ার সুজন মামলার দিন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং ২২ নম্বর আসামি আরিফুল শেখ বনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এতে প্রমাণ হয়, মামলাটি সাজানো এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
তিনি আরও বলেন, “মোস্তাফিজ নিজেই বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতার সঙ্গে ফোনালাপে স্বীকার করেছেন—মামলাটি প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী করেছেন। এই ফোনালাপের অডিও আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।”
মিলু প্রশ্ন করেন, “একজন অভিযুক্ত প্রতারক কিভাবে প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় রাজনৈতিক নেতাদের ফাঁসাতে পারে?” তিনি এই মামলার ন্যায় তদন্ত ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, “প্রয়োজনে আমরা মানহানির মামলা করবো এবং আইনি প্রতিকার গ্রহণ করবো। একইসঙ্গে প্রশাসনের যেসব ব্যক্তি এতে জড়িত তাদেরও তদন্তের আওতায় আনতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।