মোঃ বেল্লাল হোসাইন নাঈম,
স্টাফ রিপোর্টার
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে আপন দুই জেটাতো-চাচাতো ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত দুই শিশু একই পরিবারের সদস্য। এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার ও পুরো এলাকায়।
শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীহাট বাজার সংলগ্ন রবিউল লালের বাড়ির পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— মো. আবু সুফিয়ান সজিবের চার বছর বয়সী ছেলে মো. ইব্রাহীম ও তার জেঠা মো. শরীফের তিন বছর বয়সী ছেলে নাদিম হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, সকালে শিশুরা বাড়ির উঠানে খেলছিল। এসময় তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা রান্নাসহ অন্যান্য গৃহস্থালির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। খেলার একপর্যায়ে পরিবারের অগোচরে দুই শিশু পুকুরপাড়ে গিয়ে পড়ে যায়। দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে আশপাশে খোঁজ করতে থাকেন স্বজনরা।
এরপর সন্দেহভাজনভাবে পুকুরে জাল ফেলা হলে জালে উঠে আসে শিশু দুটি নিথর দেহ। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশুদের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে আহাজারি। পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিশুদুটি খুব চঞ্চল ও হাসিখুশি ছিল বলে জানান প্রতিবেশীরা। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হৃদরোগ কনসালটেন্ট ডা. মো. সাহাদাত হোসেন সাগর বলেন, “দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী তারা পুকুরে পড়ে ডুবে মারা গেছে। শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। নিহত শিশুদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। যেহেতু এটি একটি দুঃখজনক দুর্ঘটনা, তাই প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।”
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও পরিবারটিকে সান্ত্বনা দিতে বাড়িতে ছুটে যান। সবাই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে শিশুদের নজরদারির ওপর আরও জোর দিতে বলেন এলাকাবাসী। পাশাপাশি পুকুরপাড়ে সুরক্ষা দেয়াল বা বেষ্টনী নির্মাণের প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেন অনেকে।