শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় এক শতাধিক বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণের চেষ্টা করার অভিযোগে ৮০ বছর বয়সী জবেদ আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনা ঘটে ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার ধনাকুশা খালপাড় গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে গ্রামের ১০৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা জাবিরন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করছিলেন। এ সময় একই গ্রামের জবেদ আলী তাদের বাড়িতে প্রবেশ করেন। তিনি বৃদ্ধাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে বুকের ওপর বসে পড়েন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করার চেষ্টা করেন।
বৃদ্ধা জাবিরন প্রাণপণ চেষ্টা করে জবেদ আলীকে ঠেলে ফেলে দেন এবং চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বৃদ্ধার ছেলে ও বউ নুরজাহান। তারা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।
পরবর্তীতে সকালে বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। নকলা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং অভিযোগ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত জবেদ আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এমন ঘটনা তারা আগে কখনো দেখেননি এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, সমাজে বৃদ্ধ ও দুর্বল ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রাধান্য পায় না। তারা দ্রুত ও কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
নকলা থানার পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা চাই, সকল বয়সী মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।”
অভিযোগটি সমাজে বৃদ্ধদের প্রতি সহমর্মিতা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকে আবারও সামনে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃদ্ধ ও দুর্বলদের সুরক্ষায় সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি, এই ধরনের ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অপরিহার্য।
গ্রামের মানুষ এই ঘটনার পরে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বয়স বা সমাজের অবস্থা নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে।
নকলা উপজেলায় এমন ঘটনা একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা প্রতিটি বয়সী ও সমাজের সব স্তরের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী। তারা বলেন, “আমরা চাই, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা সব সময় অক্ষুণ্ণ রাখা হোক। এমন ঘটনাকে কোনভাবেই স্থান দেওয়া হবে না।”
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষদের মধ্যে সতর্কতা ও সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে। তারা প্রত্যাশা করছেন, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যেন অন্যের নিরাপত্তা ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়।