ফরিদ মিয়া, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রসুলপুর গ্রামের হেলাল মিয়া (৩৭) শারীরিক অসুস্থতার কারণে দিনমজুরি বা ভারী পরিশ্রমের কাজ করতে পারছেন না। এক সময় তিনি দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু কয়েক বছর আগে গলায় টিউমার অপারেশনের পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় বর্তমানে সংসার চালানোর একমাত্র উপায় হিসেবে ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন।
হেলাল মিয়ার পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, বাকি চারজনকে নিয়ে প্রতিদিনই সংসার চালাতে হয় তাকে। তিনি প্রতিদিন প্রায় এক হাজার টাকার ঝালমুড়ি বিক্রি করেন, যার খরচ বাদে হাতে থাকে মাত্র ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এ অল্প টাকায় পরিবারের যাবতীয় চাহিদা পূরণ করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে।
হেলাল মিয়া জানান, “ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালানো সম্ভব হলেও তা খুবই সীমিত। সামান্য লাভের টাকায় পরিবারের খরচ, সন্তানের পড়াশোনা ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। গলায় অপারেশনের পর এখন আর আগের মতো ভারি কাজ করতে পারি না। বাধ্য হয়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করছি। যদি সরকারি কোনো সহযোগিতা পেতাম, একটা ছোট দোকান দেয়ার মাধ্যমে পরিবারকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখা সম্ভব হতো।”
গ্রামবাসীও হেলাল মিয়ার পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল চরিত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন বা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে হেলাল মিয়ার মতো অসহায় মানুষরা আবারও স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
এদিকে স্থানীয়রা মনে করছেন, হেলাল মিয়ার মতো মানুষদের প্রতি সমাজ ও সরকারের সহানুভূতিশীল মনোভাব থাকলে তাদের জীবনমান উন্নত করা সম্ভব। হেলাল মিয়ার কষ্ট এবং সীমিত আয়ের কথা তুলে ধরে গ্রামবাসী মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
হেলাল মিয়ার দৈনন্দিন সংগ্রাম ও পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার এই গল্প একদিকে মানবিক সহানুভূতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে, অন্যদিকে সমাজের বিত্তবান ও কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ছাড়া অসহায় মানুষদের জীবনযাত্রা কতটা কঠিন হতে পারে তা প্রমাণ করেছে। স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন, কেউ যদি এগিয়ে আসে এবং ছোটখাটো অর্থিক বা পণ্য সহযোগিতা দেয়, তবে হেলাল মিয়ার পরিবারের জীবনের মান বৃদ্ধি পাবে।
এই পরিস্থিতি কেবল হেলাল মিয়া নয়, বরং অনেক অসহায় পরিবারের বাস্তব প্রতিচ্ছবি, যারা শারীরিক বা আর্থিক সমস্যার কারণে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। সমাজের মানুষের সহানুভূতি ও প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এই ধরনের পরিবারদের জীবনমান উন্নয়নের সম্ভাবনা কম।