আবুল হাশেম
রাজশাহী ব্যুরোঃ
এটি শুধু একটি চাকরি নয়, বরং দেশের সেবা করার এক মহৎ সুযোগ। একজন বিসিএস কর্মকর্তা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন, যার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। এমনই চিন্তাধারা নিয়ে ছোটবেলা থেকেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন বুকে ধারণ করেছিলেন মো. শাকিল শেখ। অবশেষে কঠোর পরিশ্রম আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির ফলে তিনি সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন।
শাকিল শেখ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের এক দিনমজুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. আব্দুল খালেক এবং মা দোলেনা বেগমের সংসারে বেড়ে ওঠা শাকিল সম্প্রতি ৪৮তম বিসিএস পরীক্ষায় স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী এই তরুণ পড়াশোনায় ছিলেন সেরা। ২০১৪ সালে কিশোরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জনের পর বাঘা শাহ দৌলা কলেজ থেকেও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পান। পরবর্তীতে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন পাবনা মেডিকেল কলেজে এবং সাফল্যের সঙ্গে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন।
শাকিল তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। বড় ভাই বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত, আর ছোট ভাই দেশের সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করছেন। এক বছর আগে শাকিলের বিয়েও সম্পন্ন হয়।
একই গ্রামের বাসিন্দা সাকিবুর রহমান সাকিব বলেন, “শাকিল ছোট থেকেই ভদ্র, নম্র ও পরিশ্রমী। পরিবারের সহযোগিতা আর নিজের শ্রমের মাধ্যমে আজ সে যে সাফল্য অর্জন করেছে তাতে আমরা সবাই গর্বিত।”
নিজের অর্জন নিয়ে শাকিল শেখ বলেন, “আমার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল বিসিএস ক্যাডার হবো। আল্লাহর রহমতে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। ৪৮তম বিসিএসটি শুধু ডাক্তারদের জন্য ছিল, আর সেখানেই আমি স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি।”
শাকিলের বাবা আব্দুল খালেক বলেন, “ছেলের এই সাফল্যে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। ছোটবেলা থেকেই ওর লক্ষ্য ছিল বিসিএস ক্যাডার হওয়া। আল্লাহর রহমতে আজ তা পূরণ হয়েছে।”
প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল ও উপজেলা পর্যায়ের কলেজ থেকে পড়াশোনা করেও যে বড় সাফল্য অর্জন সম্ভব, তার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শাকিল শেখ। তার এই অর্জনে শুধু পরিবার নয়, পুরো বাঘা উপজেলা আজ গর্বিত ও আনন্দিত।