মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার হাজি নুরুল হক নন্নী-পোড়াগাঁও মৈত্রী কলেজে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, মারধর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে একজন শিক্ষার্থী এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দুটি মোটরসাইকেল। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্র ও বহিরাগত মিলিয়ে মোট ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার নন্নী উত্তরবন্দ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে একাদশ শ্রেণির চলমান পরীক্ষার সময় নন্নী উত্তরবন্দ গ্রামের শিক্ষার্থী ফরহাদ ও খালভাঙ্গা এলাকার শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম আকাশের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। আকাশ বেঞ্চে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। পরে ফরহাদের বন্ধু শাকিল বিষয়টির প্রতিবাদ করলে আকাশ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তারকে খবর দেয়।
সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে যখন মুক্তার তার অনুসারীদের নিয়ে কলেজে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তারা শাকিলকে মারধর করে এবং তাকে ক্ষুরাঘাত করে। এরপর স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে বহিরাগতদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়, যখন বিক্ষুব্ধ জনতা ছাত্রদল নেতাদের দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এই ঘটনায় কলেজ প্রাঙ্গণ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছাত্রনেতা ও শিক্ষকরা কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। ঘটনাস্থলে সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফসানা আল আলম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে দীর্ঘ চেষ্টা চালিয়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসময় পুলিশ কলেজের চারজন শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন বহিরাগতসহ মোট ১৮ জনকে আটক করে। আহত শিক্ষার্থী শাকিলকে গুরুতর অবস্থায় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “পরীক্ষার সময় একজন স্থানীয় শিক্ষার্থীকে শহর থেকে আসা অপর এক পরীক্ষার্থী লাথি মারলে, প্রতিবাদকারীকেও মারধর করা হয়। পরে বহিরাগতদের ডেকে এনে শাকিলকে রক্তাক্ত করা হয়।”
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আফসানা আল আলম বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।