মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সংগৃহীত স্বাক্ষরনামাসহ একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বরাবর জমা দেওয়া হয়।
গণস্বাক্ষর সংগ্রহ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,
“প্রতি বর্ষায় পাহাড়ি ঢল ও নদীর তীব্র স্রোতে মহারশি নদীর দুই পাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। এতে শত শত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থায়ী বাঁধ ছাড়া এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি সম্ভব নয়।”
সভায় বক্তব্য রাখেন—
শেরপুরের বিশিষ্ট নাগরিক ও শেরপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া,
শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আবাদুল কাদির,
জনউদ্যোগের জেলা আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম আজাদ,
শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটির সদস্য সচিব ও সিনিয়র সাংবাদিক হাকিম বাবুল,
অর্থ সম্পাদক দেবদাস চন্দ্র বাবু,
ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর প্রতিষ্ঠাতা ও ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির এবং
সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম প্রমুখ।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঝিনাইগাতী সদর বাজারের প্রধান সড়কের পাশে গণস্বাক্ষর নেওয়া হয়।
এতে নদীর আশপাশের গ্রামের শত শত বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় চার হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়,
গত এক দশকে মহারশি নদীর ভাঙনে ৫০০-র বেশি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, সহস্রাধিক খামার ও ১০ হাজার একর আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঝিনাইগাতী সদর বাজারসহ আশপাশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর নদী ভাঙনের হুমকিতে থাকে।
ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল হক মনির বলেন,
“প্রতি বর্ষায় নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে দুই পাড়ের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়। এতে ফসল, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই এ নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ঝিনাইগাতীবাসীর প্রাণের দাবি।”
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন,
“মহারশি নদী এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবনাটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছে।”
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খৈলকুড়া এলাকায় মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
এতে ৯টি পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন, ৫০টিরও বেশি মাছের ঘের ভেসে যায় এবং শত শত একর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।