ঢাকা, ৮ মে — বিডিআর ট্র্যাজেডি মামলায় চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) জাহিদি আহসান হাবিব। তিনি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে দাবি করেন, পিলখানার সেই মর্মান্তিক ঘটনায় ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে একটি গোপন বৈঠক হয়েছিল এবং তাতে আরও কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা জড়িত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তিনি জানান, বিদ্রোহের দিন সকালে সিপাহিরা অস্ত্রসহ দরবার হলে প্রবেশ করে। পরিস্থিতি দ্রুত সহিংস হয়ে ওঠে, গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে ভীত হয়ে কর্মকর্তা ও সেনারা আশ্রয় খুঁজতে থাকেন। মেজর হাবিব বলেন, তিনি তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকিকে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন, কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরে হাসিনার হাউসগার্ড মেজর মইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখা যায়, শাকিল নামের এক অফিসার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলছেন। ফোনে বলা হয়, কিছু সৈনিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
ঘটনার একপর্যায়ে মেজর হাবিব বলেন, দরবার হলে ঢুকে তিনি আত্মপরিচয় দিয়ে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। গোলাগুলির সময় আহত হন তিনি। পরে কয়েকজন সৈনিক তাকে ধরে নিয়ে যায়, এবং তাকে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে সাবেক সুবেদার নূরুল ইসলাম তাকে রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন।
সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে, বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের প্রতিনিধি ও সেনা কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি রাইফেল স্কয়ারে একটি বৈঠকে মিলিত হবেন। মেজর হাবিবের ভাষ্যমতে, সেই বৈঠকে ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত হয়, সেনাবাহিনী পিলখানা ছাড়বে এবং তাপস কিছু সময়ের জন্য বিডিআর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া তিনি দাবি করেন, বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম এবং মাহবুব আরা গিনি উপস্থিত ছিলেন।