মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি :
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের হারুয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা ও অনিয়ম প্রকাশ্যে আসায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর (রবিবার) বেলা সোয়া ৩টার সময় বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ, অফিসকক্ষ এমনকি মূল ফটকেও তালা ঝুলতে দেখা যায়। এ দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে আসলে মুহূর্তেই ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী তো দূরের কথা কোনো শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিদ্যালয়ের পাশে বসবাস করায় মোঃ ফরহাদ আলম নামের এক শিক্ষক দ্রুত এসে তালা খোলেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, “প্রধান শিক্ষক ছুটি দিয়েছেন।”
পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজামাল মাষ্টারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি বাসায় আছি, সাড়ে তিনটার পর ছুটি দিয়েছি।” অথচ তখনও ঘড়ির কাঁটা সাড়ে তিনটা স্পর্শ করেনি। একথা বলার পর তিনি ফোন কল কেটে দেন।
বিদ্যালয়ের আশপাশের স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, “বিগত সরকারের আমল থেকেই এই স্কুলে অনিয়ম চলে আসছে। কখনো দেরিতে স্কুল শুরু হয়, কখনো আবার সময় হওয়ার আগেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। আগে এই স্কুলে জায়গা পাওয়া যেত না, আর এখন ৭ জন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থী মাত্র ৩০-৩৫ জন।”
স্থানীয়দের হতাশা স্পষ্ট। তারা বলেন, অনেক শিক্ষক সময়মতো আসেন না, অনেকেই সকাল পৌনে ১০টা কিংবা সোয়া ১০টার দিকে স্কুলে প্রবেশ করেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও। বিশেষ করে দায়িত্বের অবহেলা, পাঠদানে অনীহা ও অমনোযোগিতার কারণে ধীরে ধীরে শিক্ষার মান ভেঙে পড়েছে এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, “বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়ে সকল শিক্ষকের বদলি করা জরুরি। দায়িত্বশীল শিক্ষক নিয়োগ দিলেই কেবল এই স্কুলে শিক্ষার সঠিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফাতেমা সুলতানা বলেন, “৪টার আগে ছুটি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। অভিযোগগুলো তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”