আবুল হাশেম
রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীর বাঘায় আমের মৌসুম ঘিরে জমে উঠেছে কুরিয়ার ব্যবসা। স্বজনদের কাছে আম পাঠাতে কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবহার বাড়ায়, এখন অনেক ক্ষেত্রে আমের দামের চেয়ে পরিবহন খরচ বেশি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতা ও প্রেরকদের।
ঈদের পর থেকে প্রতিদিন বাঘা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার মণ আম পাঠানো হচ্ছে। এতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে অন্তত ১১টি কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা। সুন্দরবন, এজেআর, জননী এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কেজিপ্রতি ১০.৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৬ টাকা পর্যন্ত সার্ভিস চার্জ নিচ্ছে।
কুরিয়ার পয়েন্টগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, মোটা পলিথিন ও কাগজে মোড়ানো ঝুড়ি ও কার্টনে ঠাসা মৌসুমি আম। কেউ পাঠাচ্ছেন ঢাকায় ভাইয়ের বাসায়, কেউ জামাইয়ের জন্য রংপুরে। উপহার হিসেবে রাজশাহীর আম পাঠানো যেন এখনকার সামাজিক রীতি হয়ে উঠেছে।
নিশ্চিন্তপুরের তরুণ উদ্যোক্তা সোহানুর রহমান (শাওন) ও ‘বাঘা সেভফুট’-এর আশরাফ আলী ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইনে আম বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তারা গুণগত মানের ১০ মণ হিমসাগরসহ বিভিন্ন জাতের আম প্যাকেট করে কুরিয়ারে পাঠাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কেউ কেউ আবার হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও করছেন।
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম জানান, আমের মৌসুমে কুরিয়ার ব্যবসা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। অনলাইনে বেচাকেনা হওয়ায় আরও চাহিদা তৈরি হয়েছে। এজেআর ও জননী এক্সপ্রেসের কর্মকর্তারাও একই ধরনের তথ্য দেন।
স্থানীয় প্রভাষক দীনেশ চন্দ্র বলেন, “আম পাঠানো এখন আত্মার সম্পর্কের অংশ হয়ে গেছে। দাম নয়, ভালবাসা মূল্যবান।”
তবে অনেকেরই আক্ষেপ—এক কেজি আম ৫০ টাকা হলেও, তা পাঠাতে কুরিয়ার চার্জ ১৬ টাকা! ফলে আম কেনার চেয়ে পৌঁছাতে ব্যয় বেশি পড়ছে।
রাজশাহীর বাঘায় আম এখন শুধু একটি ফল নয়, আত্মীয়তা, ভালোবাসা আর ডিজিটাল উদ্যোগের অংশ হয়ে উঠেছে। তবে পরিবহন খরচ নিয়ে ভাবনার জায়গা থেকেই যাচ্ছে।