আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এবং রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষের প্রতিদিনকার যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নদীর নৌকা। প্রায় পাঁচ দশক ধরে করতোয়া নদীর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারাপার স্থানে সেতু না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে।
পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তিনটি ঘাট—ঋষিঘাট, হাজ্বীর ঘাট এবং অলিরঘাট—পথে যাতায়াত করেন স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। পলাশবাড়ী পৌর শহর থেকে মাত্র ৮-১৩ কিলোমিটার দূরের এই তিনটি ঘাটে দীর্ঘদিনেও কোনো সেতু নির্মাণ না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করলেও এলজিইডি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো সেতু নির্মাণের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এলাকাবাসী এখনও বাঁশের সাঁকো, নৌকা কিংবা শুকনো মৌসুমে হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
করতোয়া নদীর ওপারে ঘোড়াঘাট, রানীগঞ্জ, পীরগঞ্জসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন হাজারো মানুষ এ নদীপথ ব্যবহার করে থাকেন। বর্ষাকালে নদী কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেলে সময়মতো চিকিৎসাসেবা বা জরুরি কাজে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এতে অসুস্থ রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হয়।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি—ঋষিঘাট, হাজ্বীর ঘাট এবং অলিরঘাটে দ্রুত সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। এতে যাতায়াত হবে সহজ ও নিরাপদ, এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নেও আসবে গতি।
এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বে) তপন কুমার চক্রবর্তী জানান, “ঘাট তিনটি এলজিইডির প্রকৌশলীরা একাধিকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। আমরা অফিসিয়ালি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
এ বিষয়ে নবনিযুক্ত পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল আলম জানান, “ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”