নিউজ গ্রামবাংলা আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার পটভূমিতে আন্তর্জাতিক মহলে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ। বিশেষ করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতের সামরিক অভিযানের জেরে এবার মুখ খুলেছে রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাড়তে থাকা সামরিক সংঘাত গভীর উদ্বেগজনক। রাশিয়া বলেছে, “উভয় দেশই আমাদের মিত্র এবং আমরা চাই তারা শান্তিপূর্ণ পথে উত্তেজনা প্রশমিত করুক।” একই সঙ্গে রাশিয়া সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের প্রতিবেশী, এবং চীনও উভয়েরই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তিনি জানান, “চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে, তবে ভারতের সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন এবং দুঃখ প্রকাশ করছি।” চীন স্পষ্টভাবে উভয় দেশকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের এই সামরিক পদক্ষেপ মেনে নেওয়ার মতো নয়।” রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ নিরীহ মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে চালানো হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। এতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে নিশানাভেদী হামলা চালানো হয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, এই হামলা ছিল পরিকল্পিত, সীমিত পরিসরের এবং পাকিস্তানি সেনা স্থাপনাকে লক্ষ্য করে নয়।
জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। পাকিস্তান জানায়, ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান, একটি ড্রোন ও একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে সীমান্তে শুরু হয়েছে গোলাগুলি। এলওসি বরাবর দু’দেশের সেনারা মর্টার শেল ও গুলি বিনিময় করছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এতে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন ভারতীয় নাগরিক।
পরমাণু শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে দুই দেশকে শান্তিপূর্ণ সংলাপের পথে ফিরতে হবে।