শরিফা বেগম শিউলী, স্টাফ রিপোর্টার
রংপুরে অভিনব কায়দায় হিমাগারে আলুর পরিবর্তে মজুত করা হয়েছিলো জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘পুষ্টি’-এর মিষ্টি ও দই। ঈদের বাজারে সরবরাহের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত এসব খাবার ছিল অস্বাস্থ্যকর এবং আইন বহির্ভূতভাবে হিমাগারে রাখা। যার ফলে নগরবাসী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছিলেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত বুধবার (৪ জুন) রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শহরের ময়নাকুটি এগ্রো কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ফাঁস হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন রংপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জোয়ার্দার আসিফ ইকবাল। অভিযানে ৬৭৮০ কেজি অবৈধভাবে মজুত মিষ্টি ও দই জব্দ করে তা ধ্বংস করা হয়। পাশাপাশি, কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষ ও ‘পুষ্টি’ মিষ্টির মালিক পক্ষকে ১ লাখ করে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ময়নাকুটি এগ্রো কোল্ডস্টোরেজের এক কর্মকর্তা জানান,
“ঐতিহ্যবাহী ‘পুষ্টি’ কোম্পানি তাদের মিষ্টি আমাদের হিমাগারে রেখেছিল। ওনাদের নাকি ঈদের চাহিদা বেশি। আমাদের অনুরোধ করায় আমরা রেখেছিলাম। এটা আমাদের ভুল ছিল।”
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ ইকবাল বলেন,
“আলুর জায়গায় মিষ্টি রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। দুই পক্ষ তাদের দোষ স্বীকার করেছে। এ ধরনের মজুতকরণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।”
সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
“হিমাগারে রাখা মিষ্টি ও দই স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষকে ঠকানো হয়েছে। আমরা সেগুলো ধ্বংস করেছি।”
৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন,
“ঈদকে সামনে রেখে দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে এসব মিষ্টি হিমাগারে রাখা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল ঈদের আগে-পরে বাজারে ছাড়ার। বিষয়টি উদ্বেগজনক।”
এই ঘটনায় রংপুরবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের সময়কালে স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ খাবার বাজারে ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।