আবুল হাশেম | স্টাফ রিপোর্টার
রাজশাহী থেকে কোরবানির গরু কিনে তা সরকারি গাড়িতে করে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। বিষয়টি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলেও ইউএনও তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছেন, তিনি কোনো অবৈধ কাজ করেননি।
ইউএনও হা-মীম বলেন, “আমার বাগাতিপাড়া উপজেলায় কোনো পশুর হাট নেই। আমাকে এখানেই ঈদ করতে হচ্ছে। একটা কোরবানি তো দিতে হবে। আশপাশে খোঁজ নিয়েও গরু পাইনি। তাই রাজশাহী থেকে ফেরার সময় সিটিহাট থেকে দুই-আড়াই মণ ওজনের একটা গরু কিনে এনেছি।”
তিনি আরও জানান, “আমি তো গাড়িতে অবৈধ কিছু তুলি নাই। পেছনের কেবিনে জায়গা ছিল, তাই গরুটা তুলে এনেছি। আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালতের সময়ও অনেক জিনিস জব্দ করে গাড়ির ওই অংশে রাখি। কিন্তু গরু আনার কারণে নানা কথা উঠছে।”
তবে এ ঘটনাকে “নিন্দনীয়” আখ্যা দিয়েছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, “এটা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।” তিনি এ বিষয়ে তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছেন।
ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ায় সামাজিক প্রতিক্রিয়ায় বিভাজন দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সরকারি সম্পদ ব্যবহার কতটা গ্রহণযোগ্য? আবার অনেকেই মানবিক বিবেচনায় ঘটনাটিকে অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না।
এ বিষয়ে প্রশাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি সম্পদের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করাই সুশাসনের অন্যতম ভিত্তি। ব্যক্তিগত প্রয়োজন হলেও সরকারি গাড়ি বা যেকোনো সম্পদ ব্যবহারে সতর্কতা জরুরি, যাতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।
ঘটনার পূর্ণ তদন্তের পর স্পষ্ট হবে, ইউএনও’র এই কাজ দায়িত্ববোধের অংশ ছিল নাকি দায়িত্বচ্যুতি।