শেরপুর প্রতিনিধি:
আজ বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫ — শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মাসিক গণশুনানি। এই গণশুনানিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ সরাসরি জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তরফদার মাহমুদুর রহমানের কাছে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এদিন সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একে একে প্রবেশ করতে দেখা যায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, গরিব কৃষক, বিধবা নারী, অসহায় দিনমজুর ও সাধারণ মানুষকে। অনেকেই বছরের পর বছর ধরে জমির কাগজপত্র, ভাতা, পেনশন, ঘর বরাদ্দ, পারিবারিক বিরোধ কিংবা সামাজিক সমস্যা নিয়ে দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে আসেন। কেউ এসেছেন অন্যায়-অবিচারের বিচার চাইতে, কেউ আবার এসেছেন শুধু একটু সহানুভূতি আর শুনানি পাবেন এই আশায়।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান একজন একজন করে সকল আগত নাগরিকের কথা ধৈর্য্য সহকারে শোনেন। তাদের অভিযোগ, সমস্যা ও আবেদনের বিষয় গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতাও প্রদান করেন।
গণশুনানিতে একটি দৃষ্টান্তমূলক চিত্র দেখা যায়—এক বৃদ্ধা নারী একটি পুরাতন নথি হাতে নিয়ে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে তার অসহায় জীবনের গল্প তুলে ধরেন। তিনি সরকারি সাহায্যের আবেদন জানান। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক ইউএনও অফিসে নির্দেশ দেন তার বিষয়টি দ্রুত যাচাই করে ব্যবস্থা নিতে।
একজন বৃদ্ধ কৃষক তার বসতভিটার জমি নিয়ে বিরোধের কথা বলেন। জেলা প্রশাসক গুরুত্ব দিয়ে তার কাগজপত্র যাচাই করে সহায়তার আশ্বাস দেন। একইভাবে, একজন অসহায় নারী তার ছেলে নিখোঁজের অভিযোগ জানান, ডিসি তাৎক্ষণিক থানায় যোগাযোগের নির্দেশ দেন।
গণশুনানিতে ‘গণশুনানি’ বোর্ডসংবলিত ডেস্কের সামনে নাগরিকদের যেভাবে বসিয়ে সরাসরি তাদের অভিযোগ শোনা হয়, তা সত্যিই সরকারি সেবাকে মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন,
“জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং তাদের সমস্যার কথা শোনা প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা চেষ্টা করছি প্রত্যেক অভিযোগ বা আবেদনের বাস্তব ও মানবিক সমাধান দিতে।”
এই ধরনের গণশুনানি প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন অংশগ্রহণকারীরা। তারা আশা প্রকাশ করেন, এমন উদ্যোগ আরও নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হোক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যেন এই অভিযোগগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, গণশুনানি একটি জনবান্ধব প্রশাসনিক কার্যক্রম যেখানে সরাসরি জনসাধারণের বক্তব্য শোনা হয় এবং সঠিকভাবে সমস্যার সমাধান খোঁজা হয়। শেরপুরে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশাসন ও জনগণের মধ্যে দৃঢ় সেতুবন্ধন তৈরি করছে।
২৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ডিসি তরফদার মাহমুদুর রহমান সরাসরি সাধারণ মানুষের অভিযোগ ও দুঃখ-দুর্দশা শুনে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করেন।