মনজু হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড়:
পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের মেহেনাভিটা গ্রামে তাস খেলায় বাধা দেওয়ায় এক নববধূকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী তছলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে। নিহত শাহিনুর আক্তার (২৩) দেড় মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন।
সোমবার (৭ জুলাই) দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে শাহিনুরের বাবা-মা মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে আসেন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে। তবে রাত ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করলেও জামাই তছলিম বা তার পরিবারের কাউকে তারা খুঁজে পাননি।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে এবং মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত শাহিনুরের ভাই আব্দুর রাজ্জাক জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বোন তাকে ফোন করে জানায়, স্বামী তছলিম ২৫ হাজার টাকায় কেনা মোবাইল বন্ধক রেখে তাস খেলতে গেছে। সে বাড়ি আসতে চায় বলে গাড়ি ভাড়ার টাকা চায়। রাত হওয়ায় রাজ্জাক সকালে টাকা পাঠানোর আশ্বাস দেয়। কিন্তু পরদিন সকালে তছলিম ফোন করে জানায়, শাহিনুর বিষ খেয়েছে। পরে ফোনে শাহিনুর নিজে দাবি করে, “আমি বিষ খাইনি”—এই কথা বলার পরই ফোন কেটে দেওয়া হয়।
শাহিনুরের মা আছমা বেগম বলেন, “মেয়ের বিয়ের এক মাস হয়নি, এরই মধ্যে তাস খেলায় বাধা দেওয়ায় তাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।”
রবিবার রাত ১০টার দিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত শাহিনুরের বাবা-মা ও ছেলে স্বাধীন লাশ নেওয়ার অপেক্ষায় হাসপাতালের বারান্দায় বসে আছেন। তারা জানান, টাকার অভাবে আগেই আসতে পারেননি। এসে দেখেন, জামাই ও তার পরিবারের কেউই হাসপাতালে নেই।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবুল কাশেম জানান, “শনিবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটে শাহিনুর নামের এক নারী কীটনাশক পান করে ভর্তি হন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার অবস্থা খারাপ হলে তাকে রেফার্ড করা হয়, কিন্তু স্বজনরা তাকে অন্যত্র নিতে রাজি হয়নি। পরদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সে মারা যায়।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা দ্রুত বিচার দাবি করছেন।