বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামান লিমনের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনজীবী ইসমাইল সিরাজী। সাংবাদিকদের অভিযোগ, এটি একটি প্রতিহিংসামূলক হয়রানি মামলা। দ্রুত এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক সমাজ।
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি:
জামালপুরের বকশীগঞ্জে উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামান লিমনসহ তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনজীবী। এ ঘটনায় বকশীগঞ্জসহ জেলার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯ জুলাই শনিবার, বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের জানকিপুর মির্ধাপাড়া গ্রামে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসমাইল সিরাজী পারিবারিক বিরোধের জেরে মিল্লাত হোসেন নামে এক পল্লী চিকিৎসককে তার বাড়ির বাইরে ডেকে আনেন। তখন মিল্লাতের দুই ভাই—সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামান লিমন—ঘটনার কারণ জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এই ঘটনার তিনদিন পর, সোমবার (২১ জুলাই), অ্যাডভোকেট ইসমাইল সিরাজী জামালপুর আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি দাবি করেন, মিল্লাত হোসেন ও তার দুই ভাই লিমন ও রেজাউল করিম তাকে চাঁদা দাবি করেছে এবং হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বকশীগঞ্জ থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
সাংবাদিক মনিরুজ্জামান লিমন বলেন, “আমরা তিন ভাই একই পরিবারে এবং ইসমাইল সিরাজী আমাদের আত্মীয়। জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে তিনি এ মিথ্যা মামলা করেছেন। উদ্দেশ্য শুধু হয়রানি করা। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”
জেলার সাংবাদিক মহল এই ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমকে হুমকির একটি স্পষ্ট উদাহরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি তোলেন।
জানতে চাইলে মামলার বাদী অ্যাডভোকেট ইসমাইল সিরাজী বলেন, “আমি একজন আইনজীবী হিসেবে আমার ওপর হওয়া অপরাধের বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। এখন আইন অনুযায়ী সব কিছু হবে।”
সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের হয়রানি করতে কেউ যেন আইনকে ব্যবহার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় স্বাধীন সাংবাদিকতা চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বে।
এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ এবং পেশাজীবী মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে যদি সত্যিকার ঘটনাকে চাপা দিয়ে মিথ্যা মামলার আশ্রয় নেওয়া হয়।