কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির আসন্ন কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনার কেন্দ্রে এইচ এম হাসান ইমাম খোকন। তৃণমূলের দাবি—রাজপথের পরীক্ষিত সৈনিক খোকনই হোক নতুন নেতৃত্বের মুখ।
বরিশাল প্রতিনিধি:
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির আসন্ন কাউন্সিল ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং নতুন নেতৃত্ব নিয়ে প্রত্যাশা। দীর্ঘদিন পর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের খবরে রাজনীতির মাঠে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। এরই মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে সবচেয়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় নাম হয়ে উঠেছেন এইচ এম হাসান ইমাম খোকন।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন, তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক কর্মী নন, বরং একজন সংগ্রামী, ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতা, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে দলের দুঃসময়ে রাজপথে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। বিএনপির ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রাজনৈতিক জীবনের শুরু, আর এখনও দলের মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা—এই দুই অভিজ্ঞতার সমন্বয় তাকে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য যোগ্যতম করে তুলেছে বলে নেতাকর্মীদের অভিমত।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এইচ এম হাসান ইমাম খোকন শুধু রাজনৈতিক মঞ্চে নয়, জনগণের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেও একজন মানবিক নেতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা, সময়োপযোগী নেতৃত্বগুণ এবং সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা তাকে সাধারণ সম্পাদকের জন্য আদর্শ প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছে।
তারা আরও বলেন, বিগত সময়ে যেসব নেতারা দায়িত্বে থেকেও ইউনিয়ন বিএনপিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন, সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে একটি শক্তিশালী এবং সংঘবদ্ধ কমিটি গঠনের জন্য প্রয়োজন একজন সাহসী, ত্যাগী ও কর্মঠ নেতার। এইচ এম হাসান ইমাম খোকন সেই নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
এইচ এম হাসান ইমাম খোকনের রাজনৈতিক জীবন শুরু ছাত্রদলের মাধ্যমে। সেই সময় থেকেই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার পক্ষে স্লোগান তোলা তার রাজনীতির ভিত্তি গড়ে দেয়। পরবর্তীতে যুবদলের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে তিনি বাকেরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ওই পদে থেকে পুরো উপজেলায় বিএনপির কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও দলকে সংঘবদ্ধ রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
ফ্যাসিবাদ ও গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে বিএনপি যখন রাজপথে কঠোর আন্দোলনে, তখন এইচ এম হাসান ইমাম খোকন বারবার গ্রেফতার, হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তাতেও তার মনোবল ভাঙেনি, বরং আরও দৃঢ় হয়েছে দলীয় আদর্শে।
নিজেকে সাধারণ সম্পাদক পদের উপযুক্ত মনে করেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে এইচ এম হাসান ইমাম খোকন বলেন,
“আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি শুরু করেছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই দেশকে গণতান্ত্রিক পথে ফেরাতে রাজপথে জীবন বাজি রেখে লড়াই করছি। আমি শুধু পদ চাই না, বরং দায়িত্ব চাই। এমন দায়িত্ব, যা দিয়ে আমি দলের সকল নেতাকর্মীকে একসূত্রে গেঁথে সংগঠনকে মজবুত করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এই ইউনিয়ন বিএনপি একটা সময় খুবই শক্তিশালী ছিল। কিন্তু সময়ের প্রবাহে দল কিছুটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এখন আমাদের কাজ সেই শক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করা। আমি যদি দায়িত্ব পাই, তবে প্রতিটি ওয়ার্ড, কেন্দ্র ও গ্রামে সংগঠনের শক্তি ফিরিয়ে আনবো। গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে ইউনিয়ন বিএনপিকে কেন্দ্রীয় শক্তিতে পরিণত করবো।”
উপজেলা বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন,
“খোকন ভাই একজন নির্লোভ এবং সংগ্রামী নেতা। দলের চরম দুঃসময়ে যখন অনেকে আড়ালে ছিলেন, তখন তিনি রাজপথে ছিলেন। এমন নেতাকেই এখন প্রয়োজন। তৃণমূলের নেতা হলে তৃণমূলের ভাষা বুঝতে হবে, আর সেটা খোকন ভাই পারেন।”
আরেকজন প্রবীণ নেতা বলেন,
“সাধারণ সম্পাদকের কাজ শুধু দলীয় কাগজপত্রে সীমাবদ্ধ না। দল পরিচালনা, কর্মসূচি বাস্তবায়ন, এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করাই মূল কাজ। খোকনের মধ্যে এগুলোর সমন্বয় আছে। এই কাউন্সিলে তাকে নির্বাচিত করা গেলে কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপি নতুন গতিতে এগিয়ে যাবে।”
রাজনীতির পাশাপাশি খোকনের সামাজিক কর্মকাণ্ডও কম নয়। করোনাকালীন সময়ে তিনি নিজ উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ, খাদ্য সহায়তা এবং চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ঈদে গরিবদের পাশে দাঁড়ানো কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ায় তিনি শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক নেতাও হয়ে উঠেছেন।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, এখন আর কেবল কথার রাজনীতি দিয়ে হবে না। যিনি কাজ করতে পারবেন, মাঠে থাকবেন, তিনি-ই প্রাপ্য পদে আসীন হবেন। খোকনের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও আস্থা থেকে এমনটা বোঝা যায় যে, তারা নেতৃত্বে পরিবর্তন চায়, এবং সেই পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে খোকনকেই বেছে নিয়েছেন।
কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির আসন্ন কাউন্সিল শুধু একটি নির্বাচন নয়, বরং এটি হতে পারে নতুন যুগের সূচনা। যেখানে নেতৃত্বে আসবে মাঠের কর্মী, রাজপথের সৈনিক এবং ত্যাগী নেতা। এইচ এম হাসান ইমাম খোকনের মতো নেতারা যদি সংগঠনের হাল ধরেন, তবে শুধু কলসকাঠী নয়, বরং গোটা বাকেরগঞ্জে বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানো সময়ের ব্যাপার মাত্র।