1. admin@newsgrambangla.com : নিউজ গ্রামবাংলা :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রংপুরে ‘অর্থের জাদু’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শ্রীবরদীতে শহীদ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন এডভোকেট এরশাদ আলম জর্জ হিমাগারে মজুত ‘পুষ্টি’র মিষ্টি খেয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিতে নগরবাসী – রংপুরে ৬৭৮০ কেজি জব্দ, ২ লাখ টাকা জরিমানা ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের শুভেচ্ছা জানালেন মো. শাজাহান সজল বাকেরগঞ্জে জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ সরকারি গাড়িতে কোরবানির গরু পরিবহন, আলোচনায় ইউএনও হা-মীম: “অবৈধ কিছু তুলি নাই” বাঘায় বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বাপার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন জয়পুরহাটে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে অতিরিক্ত টাকা ফেরত পেলেন ৫০ জন ক্রেতা নালিতাবাড়ী পৌর যুবদল নেতা রুকনের ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা বার্তা নালিতাবাড়ীতে গ্রামীণ ফোনের এসআর এজেন্টদের টাকা নিয়ে উদাও

বাবা হারিয়েছে তুরাইফা, হারিয়েছে নিজের একটি পা—অভিশপ্ত এক জন্মদিনের গল্প

নিউজ গ্রামবাংলা ডেস্ক :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে
ছবি: প্রতিনিধি

আবুল হাশেম
রাজশাহী ব্যুরোঃ

মাত্র ৫ বছর বয়সে জীবনের সবচেয়ে নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে উম্মে তুরাইফা। বাবার কোলে চড়ে স্কুলে যাওয়ার পথেই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার—বাবা আর নেই, আর সে নিজেও হারিয়েছে তার একটি পা।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গ্রীন হ্যাভেন স্কুলের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী তুরাইফা প্রতিদিনের মতো বাবা জাহিদ হাসান শান্ত (২৭) ও অন্তঃসত্ত্বা মা জেসমিন খাতুনের (২৩) সঙ্গে মোটরসাইকেলে স্কুলে যাচ্ছিল। গত সোমবার (১৯ মে ২০২৫) সকাল ৮টার দিকে ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কের বানিয়াপাড়া এলাকায় পেছন থেকে আসা একটি দ্রুতগতির সুপার সনি এক্সপ্রেস বাস তাদের চাপা দেয়।

দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ে দুজনেরই ডান পা হাঁটু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গুরুতর আহত হয় জেসমিন খাতুনও, যার ডান হাত ভেঙে যায় এবং কোমর, পিঠ ও মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয়রা প্রথমে তাদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তুরাইফার বাবা শান্ত। বাবার মৃত্যুর খবর এখনও জানানো হয়নি মা জেসমিনকে, যিনি নিজেই মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।

তুরাইফা এখনো জানে না তার প্রিয় বাবা আর কোনোদিন তার কাছে ফিরে আসবেন না। সে কেবল বারবার বলছে, “বাবার কাছে যেতে চাই… ও গেলে আমার পা ঠিক হয়ে যাবে!”

জন্মদিন ছিল ১৪ মে—সে দিনই বাবার সঙ্গে ছিল শেষ জন্মদিন উদযাপন। কেবল একটি সপ্তাহের ব্যবধানে তুরাইফার জীবনের সবকিছু বদলে যায়।

তুরাইফার পরিবার নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের জামতলা গ্রামের বাসিন্দা। শান্ত এক সময় চীনে উচ্চ শিক্ষা নিতে গিয়েছিলেন। পরে দেশে ফিরে পরিবারের জন্য হার্ডওয়্যারের ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল এক সুখী জীবন, কিন্তু ভাগ্যের নির্মমতায় সে স্বপ্ন আজ ধুলিসাৎ।

এই ঘটনার পর শান্তর বাবা প্রবাসী এজাহার আলী ও মা জামিরন বেগম শোক সহ্য করতে না পেরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পরিবারের বাকপ্রতিবন্ধী সদস্য জোবাইদা নির্বাক হয়ে শুধু কাঁদছে।

চিকিৎসকদের মতে, তুরাইফা বর্তমানে স্থিতিশীল, কিন্তু তাকে সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ সময় ও চিকিৎসা লাগবে। মায়ের অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত নয়। গর্ভে থাকা অনাগত শিশুর ভবিষ্যত নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এলাকাবাসীর একটাই চাওয়া—এই দুর্ভাগ্য আর কোনো পরিবার যেন না দেখে। সড়ক হোক নিরাপদ, সবার জন্য।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত নিউজ গ্রামবাংলা-২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট